করোনাভাইরাস

মৃতু্য বেড়ে ২৬৯৮ প্রস্তুতি জোরদার করার তাগিদ

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইতোমধ্যে আশি হাজারের বেশি মানুষকে আক্রান্ত করে ২৬৯৮ জনের মৃতু্য ঘটানো নতুন করোনাভাইরাস যাতে বিশ্বজোড়া প্রাদুর্ভাব হয়ে দেখা দিতে না পারে সেজন্য আরও জোরেশোরে প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কোনো সংক্রামক ব্যাধি যখন মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়, রোগতত্ত্বের ভাষায় তখন তাকে বলে প্যানডেমিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে তারা এখনই 'প্যানডেমিক' তকমা দিচ্ছে না। কিন্তু পরিস্থিতি যাতে সেদিকে না যায়, সেজন্য সব দেশকেই প্রস্তুতির মধ্যে থাকতে হবে। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯। গত ডিসেম্বরের শেষে মধ্য চীনের উহান থেকে ছড়াতে শুরু করা এ রোগ ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে ৩৫টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দেশটির মূল ভূখন্ডে ৫০৮ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৪০৯ জন। সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭ হাজার ৬৫৮ জনে। আর বিশ্বে এ সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। সোমবার চীনে মোট ৭১ জনের মৃতু্য হয়েছে নতুন এ করোনাভাইরাসে, এর মধ্যে ৬৮ জনই মারা গেছেন হুবেই প্রদেশে, যে অঞ্চলকে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রভূমি বলা হচ্ছে। চীনের মূল ভূখন্ডে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতু্যর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৬৩ জনে। চীনের মূল ভূখন্ডের বাইরে আরও আটজনের মৃতু্য হয়েছে সোমবার, সব মিলিয়ে চীনের বাইরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ইরানে ১২ জন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালিতে ৭ জন করে, জাপানে চারজন, হংকংয়ে দুইজন এবং ফিলিপিন্স, ফ্রান্স ও তাইওয়ানে একজন করে আক্রান্তের মৃতু্য হয়েছে। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস মানুষের দেহে এসেছে- সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। এ রোগের কোনো প্রতিষেধকও মানুষের জানা নেই। এখন পর্যন্ত এ রোগে মৃতু্যর হার রয়েছে দুই শতাংশের নিচে, যা সার্সের চেয়ে কম। এক সপ্তাহ আগেও নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপ চীনের মধ্যেই ছিল বেশি। কিন্তু গত কয়েক দিনে দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরানের পরিস্থিতির দ্রম্নত অবনতি ঘটেছে। সোমবার ইরাক, আফগানিস্তান, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইনেও কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে অর্থনীতির জন্য। সেই উদ্বেগে মঙ্গলবার বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে সূচক পতন ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। তবে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব অর্থনীতির এই থমকে যাওয়া সাময়িক। তারা আশা করছেন, বছরের প্রথম প্রান্তিকের পর ভাইরাসের প্রকোপ কমতে শুরু করলে ব্যবসা-বাণিজ্যও দ্রম্নত স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।