গলা কেটে স্বামী হত্যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন স্ত্রী

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
গাজীপুরের শ্রীপুরে ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের (৪৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায়র্ যাবের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন হত্যার প্রধান আসামি সামিরা আক্তার (২৬)। মূলত দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর অবৈধ ও অনৈতিক দাবি পূরণে বাধ্য হয়ে ক্ষোভ থেকে স্বামীকে হত্যা করেন সামিরা। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় রাজধানীর দক্ষিণখান (কোটবাড়ী) এলাকার চাচার বাসা থেকে আব্দুর রহমানের চতুর্থ স্ত্রী সামিরাকে গ্রেপ্তার করেছের্ যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের সদস্যরা। এ সময় সামিরার বাবা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আলী হোসেনকেও (৫৫) গ্রেপ্তার করের্ যাব। র্ যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডর লে. কমান্ডার আব্দুলস্নাহ আল মামুন জানান, গোপন সংবাদের মাধ্যমে খবর পেয়ের্ যাব সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সামিরা আক্তার জানান, গত ১০ ফেব্রম্নয়ারি রাতে আব্দুর রহমান তার ব্যবসায়িক পার্টনার রতন মিয়ার সাথে সামিরাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌন কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করে। রাত ১১টায় রতন বাসা থেকে চলে যায়। ভোর রাত আনুমানিক ৩টায় সামিরা বাসায় থাকা ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় লম্পট স্বামী আব্দুর রহমানকে জবাই করে হত্যা করেন। না চেনার জন্য লাশের মুখে অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেন এবং লাশ তোষক দিয়ে মুড়িয়ে রাখেন। সামিরা আরও জানান, ঘটনার পর লাশ সরিয়ে ফেলার জন্য সামিরা তিন দিন ওই ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন। তাতে ব্যর্থ হয়ে মা-বাবার সহযোগিতায় বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনের পর ২৩ ফেব্রম্নয়ারি দক্ষিণখান (কোটবাড়ী) এলাকার তার চাচার বাসায় আসেন। আসামি সামিরা আরও জানান, আব্দুর রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে টঙ্গীতে বসবাস করত। সামিরা ২০১৬ সালে টঙ্গী সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রী পরীক্ষার্থী ছিলেন। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে সে ভিকটিমের টঙ্গীর বাসায় থেকে ডিগ্রী পরীক্ষা দিতেন। এ সুযোগে ভিকটিম তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে কৌশলে তার খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ পান করিয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করে এবং ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে উক্ত ধর্ষণের ভিডিও এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে আব্দুর রহমান তাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় সামিরার প্রথম স্বামী তাকে ডিভোর্স দেয়। এরপর থেকে সামিরা শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকায় একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভিকটিম আব্দুর রহমান সামিরাকে বিয়ে করে এবং তাকে নিয়ে শ্রীপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করা শুরু করে। বিয়ের পর থেকে আব্দুর রহমান ব্যবসায়িক স্বার্থে বা কখনো বিপুল টাকার বিনিময়ে তার পার্টনারদের সাথে স্ত্রী সামিরাকে যৌন কাজে বাধ্য করত। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সামিরা আব্দুর রহমানের কাছ ডিভোর্স চাইলে সে সামিরাসহ তার মা ও ভাইকে খুন করার হুমকি দেয়। এসব ঘটনার জেরে আব্দুর রহমানকে খুন করতে বাধ্য হন বলে জানান সামিরা।