বিদেশফেরতরা কোথায় আছেন, জানাতে হবে থানায়

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
নভেল কোরোনাভাইরাস প্রকোপের মধ্যে যারা বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন, তাদের নিজ নিজ অবস্থানের তথ্য থানায় জানাতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তর। মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রেস নোটে বলা হয়, 'বিদেশফেরত ব্যক্তিরা বর্তমান অবস্থান এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে সহায়তা না করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়ার মধ্যে বিদেশফেরত অধিকাংশ ব্যক্তিই পাসপোর্টের দেওয়া ঠিকানায় অবস্থান না করায় তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশফেরতদের বাধ্যতামূলকভাবে ঘরে থাকার (হোম কোয়ারেন্টিন) কথা বলা হলেও তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় বিদেশফেরতদের নিজ উদ্যোগে স্থানীয় থানায় তথ্য দিয়ে তাদের অবস্থান জানাতে অনুরোধ করা হলো পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে। এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা স্বাক্ষরিত প্রেসনোটে বলা হয়, 'বিদেশফেরত অধিকাংশ ব্যক্তি তাদের পাসপোর্টের ঠিকানায় অবস্থান না করে ঘোরাফেরা করছেন, যা বর্তমান পরিস্থিতির কারণে নিজের এবং সাধারণ জনগণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।' এতে সরকারের নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে জানিয়ে প্রেসনোটে বলা হয়, '১ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত যারা দেশে এসেছেন তাদের নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করে বর্তমান অবস্থান, মোবাইল নম্বর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্যথায় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮, বাংলাদেশ দন্ডবিধি, সেই সঙ্গে প্রযোজ্য অন্যান্য আইনের উপযুক্ত ধারা প্রয়োগ করা হবে। প্রয়োজনে পাসপোর্ট রহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।' বিদেশফেরতদের পক্ষে অন্য কেউ গিয়েও থানায় তথ্য দিতে পারবেন বলেও প্রেসনোটে বলা হয়। তবে এ পর্যন্ত কতজন এসেছেন তার কোনো তথ্য প্রেসনোটে উলেস্নখ করা হয়নি। চীনের উহান থেকে ছড়ানো নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বের শতাধিক দেশে ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ লাখেরও বেশি। বাংলাদেশে সোমবার পর্যন্ত এ ভাইরাসসৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩। আক্রান্তদের অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে বিদেশফেরতদের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে দাবি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার নেওয়ার মধ্যে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ৬ লাখ ৬ হাজার ১২ জন বাংলাদেশি দেশে এসেছেন। এছাড়া দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও স্থল ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করেও এসেছেন অনেকে। বিদেশফেরত সবাইকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও তা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে তা না মেনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা বিদেশফেরতদের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কিছু ঘটনাও ঘটেছে।