মায়ের মোবাইলের খুদে বার্তানুযায়ী পড়বে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২০, ০০:০০

নূর মোহাম্মদ
করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি প্রথম দফায় বাড়িয়ে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এ ছুটি আরও দীর্ঘায়িত হয়ে ঈদ পর্যন্ত করার কথা ভাবছে সরকার। এ লম্বা সময় শিক্ষার্থীদের বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে বিভিন্ন উপায় খুঁজছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে রেকডিং ক্লাস প্রচার করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। একই পদ্ধতিতে ক্লাস করানোর কথা ভেবেও শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়ালেখা চালিয়ে যেতে প্রাথমিকে অধ্যয়নরত ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের মোবাইলে ইউনিক এসএমএস (খুদেবার্তা) পাঠানো হবে। এ বার্তায় শিশুদের ঘরের বাইরে বের না হওয়া, শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবাদ হওয়ার মতো কিছু নির্দেশনা থাকবে। আগামী সপ্তাহে এই এসএমএম পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউলস্নাহ। তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর কারণে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার কথা ভাবছি। এরই অংশ হিসেবে আপাতত খুদেবার্তার মাধ্যমে বাচ্চাদের নিয়মিত পড়ালেখা করাতে ১ কোটি ৪০ লাখ শিশুর মায়েদের কাছে বিটিসিএলের মাধ্যমে এসএমএস পাঠানো হবে। কর্মকর্তারা বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের মতো টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করানো প্রাথমিক পর্যায়ে কঠিন। কারণ এটা করতে হলে সবার বাসায় টেলিভিশন, ডিশ লাইন এবং বিদু্যৎ সংযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু মফস্বলের অনেক এলাকা এ তিনটির কোনটিই নেই। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা ঠিক হবে। কর্মকর্তারা বলেন, বন্ধের সময়টুকুতে মাধ্যমিকে চেয়ে প্রাথমিকের ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তবে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক টাচে রাখতে এটুআইর প্রযুক্তিগত সহায়তায় বিকল্প পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সব জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নানা নির্দেশনা দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন। সেখানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত পড়ালেখা চালিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের মায়েদের মোবাইলে ইউনিক এসএমএস পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, দেশের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়েদের মোবাইলে একটি ইউনিক এসএমএস পাঠানো হবে। এ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে যা পড়ানো হয়েছে, যা পড়ানোর কথা ছিল তা বন্ধের মধ্যে মায়েদের তত্ত্বাবধানে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বলা হবে। এই এসএমএস'টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে নিয়মিত সংসদ টেলিভিশন ও রেডিওর মাধ্যমে সিলেবাস অনুযায়ী শ্রেণি পাঠের ক্লাস সম্প্রচার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের সেরামানের শিক্ষকদের দ্বারা ভিডিও রেকর্ডিং করে তা সম্প্রচার করা হবে। নিয়মিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের করা মোবাইলে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মনিটরিং করতে বলা হয়েছে। এসব বিষয় বাস্তবায়নে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয় বৈঠকে।