তিন হাজার হাজতিকে মুক্তি দেওয়ার সম্ভাবনা

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বিভিন্ন মামলায় বিচারাধীন প্রায় তিন হাজার হাজতিকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। হাজতিদের একটি তালিকা তৈরি করে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে কারা-কর্তৃপক্ষ। কারা-অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন বুধবার বলেন, 'করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এই প্রস্তাব দিয়েছি, এটা মন্ত্রণালয়েরই আদেশে। যাদের মামলা এখনো বিচারাধীন, জামিনযোগ্য অপরাধ হলে তাদের জামিন দেয়া যায় কিনা, জামিনযোগ্য ছোট-খাটো অপরাধে যারা কারাগারে রয়েছেন, এ রকম তিন হাজারের সামান্য বেশি হাজতির নাম প্রস্তাব আকারে মন্ত্রণালয়ে দিয়েছি।' আবরার হোসেন বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে ওই প্রস্তাব যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখানে আপত্তি না থাকলে পাঠানো হবে আদালতে। 'শেষ পর্যন্ত বিচারকই সিদ্ধান্ত নেবেন, জামিন দেয়া যায় কিনা। মুক্তির বিষয়টি বিচারকদের হাতে, আমাদের হাতে নয়।' আবরার হোসেন বলেন, রুটিন প্রক্রিয়া হিসেবে বছরের বিভিন্ন সময় তারা কিছু বন্দির মুক্তির সুপারিশ করতেন। যাদের অল্প সাজা বাকি আছে, যারা অচল, অক্ষম বা বৃদ্ধ- এরকম বন্দিদের তালিকা করে নিয়মিতভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। 'মন্ত্রণালয় মিটিং করে, বোর্ড করে তাদের মধ্যে থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে। এ রকম বন্দিদের সাধারণত ঈদ, নববর্ষ, বা জাতীয় দিবস সামনে রেখে মুক্তি দেয়া হয়। সে রকম বন্দিদের একটি প্রস্তাবও আলাদাভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে'। বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে আট লাখ মানুষ, ৪২ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে। আর বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৫৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, ছয়জনের মৃতু্যর খবর জানানো হয়েছে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে। নভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে বলে কারাগারগুলোতে ঝুঁকির মাত্রা থাকে অত্যন্ত বেশি। চীনসহ কয়েকটি দেশের কারাগারে এর আগে ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকি এড়াতে ইরানও এর আগে বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দিদের সাময়িক মুক্তি দিয়েছে। দেশের ৬৮টি কারাগারের ৯০ হাজারের মতো বন্দি রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে কোনো বন্দি আক্রান্ত হননি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৪০ জন বন্দিকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী বলেন, 'এখন আসামি আসার সংখ্যাও কমে গেছে। আগে দিনে দুই শতাধিক বন্দি আনা হতো এখানে। এখন ৬০ জনের বেশি আসছে না।' স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রস্তাবটি তাদের হাতে রয়েছে। কাজ শেষ হলে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে কারা কর্তৃপক্ষকে ওই তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু জানান।