শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঘোর অনিশ্চয়তায় কাটছে পরিবহণ শ্রমিকদের দিন

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
অঘোষিত লকডাউনে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। এ সময় গাড়ি মেরামতের কাজ সেরে নিচ্ছেন তারা -যাযাদি

করোনাভাইরাসে যানবাহন বন্ধ থাকায় দিশেহারা পরিবহণ শ্রমিকরা। ঘোর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের। অনেকের ঘরে নেই খাবার। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা।

শ্রমিকরা বলছেন, এভাবে আর কয়েকদিন চললে না খেয়ে মরতে হবে তাদেরকে। গাড়ির চাকা না ঘুরলে পরিবারেও জ্বলে না চুলা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় সরকারের নির্দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সবধরনের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আপাতত বেকার কয়েক লাখ পরিবহণ শ্রমিক। অনেকে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। এ দুঃসময়ে কোনো পরিবহণ নেতাও এগিয়ে আসছেন না।

যদিও শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়মিত কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হতো। কিন্তু এ দুঃসময়ে পাশে নেই পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতারা। ফলে ঘোর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে লাখো শ্রমিকের।

জানা গেছে, করোনায় বড় ধরনের আঘাত এসেছে যেসব সেক্টরে, তন্মধ্যে পরিবহণ খাত অন্যতম। দেশের সব গণপরিবহণের চাকা এখন অচল। সেইসঙ্গে প্রাইভেট পরিবহণ ও পণ্য পরিবহণ শ্রমিকদেরও অধিকাংশ এখন বেকার। আপাতত কোনো কাজ নেই তাদের।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাইভেট কিছু পরিবহণের শ্রমিক মাসিক বেতনে কাজ করলেও অধিকাংশ শ্রমিক দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পান। ট্রিপ দিলে নির্দিষ্ট টাকা, আর ট্রিপ না দিলে কোনো টাকা নেই। ফলে কাজ না থাকলে ওই শ্রমিক ও তাদের পরিবারের না খেয়েই দিন কাটে।

পরিবহণ শ্রমিক মনজুরুল ইসলাম

বলছিলেন, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তার পরিবার চালাতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে মাস শেষ হলেই মাথার ওপর বোঝা বাসা ভাড়া। এখন আয় নেই, কীভাবে খাবো আর বাসা ভাড়া দেব। এ পরিস্থিতিতে দিশেহারা এ পরিবহণ শ্রমিক।

রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকার বাসিন্দা পরিবহণ শ্রমিক হোসেন মিয়া বলেন, আমি নয় নম্বর রুটের বাস চালাই। স্বাভাবিক সময়ে যেদিন কাজ করি সেদিন টাকা পাই। আর কাজে না গেলে কোনো টাকা নেই।

তিনি বলেন, ঘরে যে চাল-তরকারি ছিল তা দিয়ে ক্থদিন কোনোরকম চলেছে। এখন আর চলছে না। কারো কাছ থেকে ধার নেব সে রকমও কেউ নেই। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখন না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে।

আবিদুর রহমান নামে এক পরিবহণ শ্রমিক দৈনিক বাংলা থেকে বাসাবো হিউম্যানহলার চালান। তিনি জানালেন, রোজ হিসেবে গাড়ি চালান। নির্ধারিত বেতন থাকলে ভিন্ন কথা থাকত। মাস গেলে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। গাড়ি চলুক কি, না চলুক তা মালিক বুঝত। এখনতো পরিস্থিতি ভিন্ন। কাজ নেই তো টাকা নেই। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কীভাবে চলবেন সেই দুশ্চিন্তায়।

আসমানী পরিবহণের চালক পলাশ উদ্দিন বলেন, আমরা ট্রিপ দিলে টাকা পাই। দিনে যা আয় করি, দিনেই তা শেষ হয়ে যায়। পরদিন খেতে হলে কাজে যেতে হয়। শ্রমিকদের কোনো পুঁজিও নেই। ফলে কাজ না থাকলে না খেয়েই থাকতে হয়।

পরিবহণ শ্রমিকরা বলেন, তাদের কল্যাণের নামে সারা বছর কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। পরিবহণ শ্রমিকদের কল্যাণের নামে এ চাঁদা উত্তোলন হলেও দুর্দিনে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা এখান থেকে কেউ কোনোরূপ সাহায্য পেয়েছেন বলে তাদের জানা নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95117 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1