করোনায় মৃতু্য হলে নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন

প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, 'যাদের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষায় পজেটিভ এসেছে তাদের মৃতু্যর পর দাফন করা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী। আমরা যে গাইডলাইন তৈরি করেছি তার দাফন করা হবে সেই গাইডলাইন অনুসরণ করে।' তিনি বলেন, 'আর করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে যারা বিভিন্ন রোগে মারা গেছেন, যাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে তাদের সাধারণ মৃতু্য। তাদের সাধারণভাবেই দাফন করা হবে।' শুক্রবার দুপুর ১২টার দিক রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস মিলনায়তনে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা রোগটা কোনো অচ্ছুৎ রোগ নয়। যার শরীরে ভাইরাস ঢুকেছে- এ ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, নাও দিতে পারে। তিনি সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। কাজেই এটা এমন কোনো বিষয় না। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, অথবা যে কেউ যদি মারা যান তখন একটা শোকের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমরা এটা মানতে পারি না। এ মুহূর্তে আমরা যদি সৎকার করতে বাধার সৃষ্টি করি অথবা ওই ধরনের অপবাদ দেই। সেটা ঠিক নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবেই ২ হাজার ৫০০ মানুষ মৃতু্যবরণ করে। মৃতু্যর মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ মৃতু্য হয় অসংক্রামকজনিত রোগে। পাশাপাশি অনেক জটিলতা, সড়ক দুর্ঘটনা, মাতৃত্বজনিত সমস্যা, শিশুদের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় মৃতু্য হয়। ২৪ ভাগ মানুষের বার্ধক্যজনিত কারণে মৃতু্য হয়। অনেক মানুষের মৃতু্য এখন এ কারণেই হচ্ছে। হঠাৎ করে করোনার জন্য মৃতু্য সংখ্যা বাড়েনি। তিনি বলেন, আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ আছে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। বেশি বেশি পরীক্ষা করলে করোনা সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে। ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ কথা সত্য, হঠাৎ করে করোনার কারণে আমাদের মৃতু্য ৩? হাজার বা ৪ হাজারে বৃদ্ধি পায়নি। এ জিনিসটা আমরা খতিয়ে দেখছি। কাজেই সাধারণ মানুষকে একটা জিনিস বলব, যে কোনো ধরনের মৃতু্য, করোনাজনিত মৃতু্য নয়। আমরা যেহেতু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছি, আমরা চেষ্টা করব যাদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের যত দ্রম্নত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায়। আমাদের ডাক্তাররা বোঝেন কোনটা করোনা হতে পারে। কোনটা করোনা হতে পারে না।? চিকিৎসকরা যেটা বলবেন সেটা সাধারণ মানুষ যেন বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইইডিসিআর ১২৬টি পরীক্ষা করেছে। এছাড়া বাকি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ৩৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এদের মধ্যে ৫ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ৫ জনের মধ্যে আইইডিসিআরে দুইজন বাকি তিনজন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে শনাক্ত হয়েছে। যেহেতু নতুন ল্যাবে ৩ জন? শনাক্ত হয়েছে সেহেতু আমরা কিছু যাচাই-বাছাই করব। ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মোট ৬১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে।? মৃতু্যবরণ করেছেন ৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৬ জন। আমাদের কাছে চিকিৎসাধীন আছেন ২৯ জন। এদের মধ্যে ২২ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি সাতজন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৮২ জন। তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ঢাকার মধ্যে ৯টি পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও ৫টি স্থাপন করা হয়েছে যেগুলো পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। পরীক্ষাও চলছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রত্যেকটি বিভাগে পিসিআর মেশিন স্থাপন করতে পারব। এপ্রিল শেষ হওয়ার আগেই অন্তত ২৮টি প্রতিষ্ঠানে পিসিআর স্থাপন করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন ল্যাবে কিট পাঠানোর পরও ৭১ হাজার কিট আমাদের কাছে মজুদ আছে। প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।