স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের অসহায়ত্ব!

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
জাহিদ মালেক
এক ধরনের অসহায়ত্বই প্রকাশ করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে 'কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় কমিটি' গঠন করা হলেও এর প্রধান হিসেবে কার্যক্রমের অনেক কিছুই তিনি জানেন না বা তাকে জানানো হয় না বলে আক্ষেপ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে বিসিপিএস ভবনে সম্মেলন কক্ষে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে জরুরি এক সভায় জাহিদ মালেকের এমন অসহায়ত্ব প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, 'একটা ন্যাশনাল কমিটি ফর্ম করা হয়েছে, সে ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান আমাকে করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে। কিন্তু ন্যাশনাল কমিটিতে যেসব সিদ্ধান্ত হচ্ছে, সে সিদ্ধান্তগুলো আমাদের নলেজে (জানা) নেই। কখন ফ্যাক্টরি খোলা হবে বা হবে কি না, এ বিষয়ে আমরা জানি না। কখন মসজিদে নামাজ কীভাবে হবে বা আলোচনা, সে বিষয়ে আমরা জানি না এবং কখন রাস্তা খুলে দেবে, বন্ধ করে দেবে, এ বিষয়ে আমরা জানি না। স্বাস্থ্য বিষয় বাদে কোনো ধরনের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয় না, হয়নি।' করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণার সময় দেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরের দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার ছুটি বাড়ালেও ৫ এপ্রিল থেকে কারখানা খুলতে থাকায় সামাজিক দূরত্বের নিষেধাজ্ঞাকে পায়ে মাড়িয়ে হাজারো পোশাক শ্রমিক ঢাকায় ফেরেন। এ অবস্থায় এভাবে শ্রমিকদের ফেরানোয় সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর মধ্যে রোববার করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, শ্রমিকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে জাতীয় সমন্বয় কমিটি কোন পদক্ষেপ নিয়েছে? করোনা মোকাবিলায় তাদের কাজ কী তাহলে? তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'জাতীয় কমিটির কাজ হলো যেটা দেখছেন সেটা। আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছি, কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করছি, করোনা টেস্ট করছি, আমাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক বেশি কাজ হবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক কাজগুলোই আমরা করে থাকি। কারখানা খোলা, বন্ধ করা আমাদের কাজ নয়। লকডাউন করা, গাড়ি না চলা- এগুলো অন্যান্য মন্ত্রণালয় যারা এ কমিটিতে আছে তাদের দায়িত্ব।' জাতীয় কমিটির কার্যক্রম ও সাংবাদিকদের সেই প্রশ্নের সূত্র ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমবারের সভায় বলেন, 'আমি সাংবাদিকের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। তাদের আমি সদুত্তর দিতে পারি না। শুধু দেশের সাংবাদিকরা নন, আজকাল আমাকে বিদেশ থেকেও অনেক সাংবাদিক ফোন করেন। ফোনে ইন্টারভিউ নেন, ফোনে-টেলিভিশনে যুক্ত হন তারা। এসব বিষয়ে আলোচনা করে এবং অনেক সময় দোষও দেয়। আপনি যদি এ কমিটির মধ্যে থাকেন তাহলে এ সিদ্ধান্তগুলো আপনি জানেন না কেন? এটাও একটা সমস্যা। আমি সচিবকে বলেছি, এ বিষয়ে আলোচনা করে আমাদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত না নিলেও অন্তত পরামর্শ করতে পারে। তখন আমরা আমাদের পরামর্শ ওপিনিয়নটা দিতে পারি।'