মৃত্যু আরও ১১ জনের

একদিনে শনাক্ত হাজার ছাড়াল

প্রকাশ | ১২ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। এ সময় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। তবে মৃতু্যর সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ পাঁচজন এবং নারী ছয়জন। মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন ও রংপুর বিভাগে একজন রয়েছেন। সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। তিনি নতুন সংযুক্ত একটিসহ মোট ৩৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও সাত হাজার ২৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ২০৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ২৯ হাজার ৮৬৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৯-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫২ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ৯০২ জন। নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, ছয়জন নারী। আটজন ঢাকা বিভাগের, দুজন চট্টগ্রাম এবং একজন রংপুর বিভাগের। এদের মধ্যে সত্তরোর্ধ্ব একজন, ষাটোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব চারজন, চলিস্নশোর্ধ্ব দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সি একজন রয়েছেন। গত রোববার (১০ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃতু্য হয়েছে। পাঁচ হাজার ৭৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৮৮৭ জনের দেহে, যা সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্যর সংখ্যা কমলেও হয়েছে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড। সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরও ১৮৩ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন দুই হাজার ২৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ১৭৬ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৬৩৪টি। আইসিইউ শয্যা আছে ৩৩৫টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৬০ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে দুই লাখ ১২ হাজার ৯৮৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪৩৯ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৪০ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩৬ হাজার ৩৪৩ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেওয়া যাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে। বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, আপনার সুস্থতা আপনার হাতে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা যেন স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি। চীনের উহান শহরে গত ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন গোটা বিশ্বই করোনাভাইরাসের কবলে। মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪২ লাখ। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৮৪ হাজার প্রায়। তবে প্রায় ১৫ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃতু্যর মিছিলও। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে ছুটি। বন্ধ বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহণ। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত রোববার (১০ মে) থেকে শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে দোকানপাট ও শপিংমলও।