শীত। বাংলা ষড়ঋতুর পঞ্চম ঋতু। পৌষ ও মাঘ- এই দুই মাস মিলে শীতকাল। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রম্নয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত শীতকাল হলেও নভেম্বর থেকেই অনুভূত হয় শীত শীত আবহ। শীতকালে ঘন কুয়াশা হয়, পাতা ও ঘাসে শিশির বিন্দু জমে থাকে। সবকিছুই সাধারণত থাকে ঠান্ডা শীতল। এ সময়ে রাত বড় থাকে। দিন থাকে ছোট। হেমন্তকে বিদায় জানিয়ে প্রকৃতিতে এখন বইছে শীতের আগমনী পূর্বাভাস। গ্রাম তো বটেই, শহরেও সকালবেলা অনুভূত হয় হালকা শীত। কুয়াশায় ছেয়ে থাকে চারপাশ। তবে ঋতু পরিবর্তনের এ সময়টাতে সতর্র্ক থাকা বেশি দরকার। অসতর্কতার দরুন অনেকেই এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষত ঠান্ডা কাশিজনিত অসুস্থতা।
শীতকাল বেশ কিছু কারণে সবার প্রিয় ঋতু। তার মধ্যে একটি হলো, শীতকালে গাঁও-গেরামে হরেক রকমের পিঠার ধুম পড়ে যায়। পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, ঝিনুক বা খেজুর পিঠাসহ আরও অনেক পিঠাপুলির উৎসব পড়ে যায়। বিশেষ করে এ সময় খেজুরের রস আর হেমন্তের নতুন চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয় আরও অনেক ধরনের পিঠা পায়েস।
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্যও শীতকাল দারুণ একটি ঋতু। কারণ, শীতকালে অনেক রকমের ফুল ফোটে। যেমন- গাঁদা, অশোক, ইউক্যালিপটাস, কুরচি, ক্যামেলিয়া, বাগানবিলাস, গোলাপ এবং সরিষাসহ নাম না জানা অনেক ফুল।
শীতকালে বড় ছোট সবার গায়ে শোভা পায় মোটা মোটা শীতবস্ত্র। জ্যাকেট, সোয়েটার, শাল ও মাফলারে সবাই পেঁচিয়ে রাখে পুরো শরীর। ধনী এবং মধ্যবিত্ত সমাজের জন্য এসব শীতের কাপড় সহজলভ্য হলেও গরিব এবং দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জন্য তা কেনা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। আর তাই শীত এলে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কিছু জেলার খবর শোনা যায়- যেখানকার মানুষের শীতবস্ত্রের অভাবে পোহায় হয় অনেক রকম কষ্ট। আমরা যারা শক্ত সবল- তাদের উচিত, শীত এলে সেসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাহলে শীতকালটা তাদের জন্যও হবে উপভোগ্য। মাঝখানে তাদের সহযোগিতা করার কারণে লাভ করব মহান আলস্নাহর সন্তুষ্টিও।