আম্পানে কলা চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ!

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ০০:০০

আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা
পাবনায় ঘুর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত কলা বাগান -যাযাদি
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সর্বশান্ত হয়েছেন কলা চাষখ্যাত পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়ন কলা চাষিরা। অধিকাংশ কলার বাগানে গাছ হেলে ভেঙে গেছে, আবার উপড়ে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। আর একমাস সময় পেলেই পরিপক্ব কলাগুলো বাজারে বিক্রি করা সম্ভব ছিল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়ার আগেই সে স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে কলা চাষিদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে, এ জেলায় এবারে কলার চাষ হয়েছে ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ অঞ্চলের ৩ হাজার হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। এসব কলা বাগানে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে অধিকাংশ গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। অপরিপক্ব কলা ঝুলছে গাছগুলোতে। ক্ষতিগ্রস্ত কলাচাষিদের দাবি, সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা না পেলে পথে বসতে হবে। অনেকেই কলা চাষের উপর জীবিকা নির্বাহ করেন। কলার এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে তাদের পাশে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে এমন প্রত্যাশা তাদের। পাবনার চরশিবরামপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কলাচাষি তোফাজ্জল হোসেন জানান, '১৬০ বিঘা জমিতে কলা লাগিয়েছিলেন। করোনার কারণে কলা কাটতে পারেননি। আম্পানের কারণে তার বাগানের সব কলা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জমি বর্গা নিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা ধার করে এই কলা লাগিয়েছিলেন। এখন তিনি নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কলাচাষি বজলুর রহমান বগা জানান, এবারে ১০০ বিঘা জমিতে প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার কলার গাছ লাগান। সার, শ্রমিকসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ আম্পানের আঘাতে তার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি এখন দিশেহারা হয়ে গেছেন। হেমায়েতেপুর ইউনিয়ন কলাচাষি সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক জায়েদুল সরদার বলেন, এবার সমিতির ৭৭ জন সদস্য প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে কলা চাষ করেছে। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে তাদের। সরকারের কাছে তারা সহায়তা দাবি করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, পাবনা উপ-পরিচালক ড. আজাহার আলী বলেন, আম্পানে প্রায় ৭০০ হেক্টর জমির কলা নষ্ট হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন দপ্তরে রিপোর্ট করা হয়েছে। সরকার সহায়তা দিলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।