আকস্মিক ঝড়ে ৭ জেলায় নিহত ৪, ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
বুধবারসহ গত কয়েকদিনের আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নীলফামারী, জয়পুরহাট, বগুড়া, ভোলা, শেরপুর ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জয়পুরহাটে মা-ছেলেসহ চারজন নিহত ও অন্যান্য স্থানে বসতঘর, ফসলি জমি, গাছপালাসহ প্রায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বুধবার সকালে বয়ে যাওয়া ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক ঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। ছিঁড়ে গেছে বিদু্যতের তার। ঝড়ের পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ৯ ঘণ্টা বিদু্যৎ ছিল না। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ঝড়ে তারাগন, দেবগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদু্যতের তার তার ছিঁড়ে যাওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নীলফামারী : বৈরি আবহাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ইরি-বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নীলফামারীর কৃষকরা। মাঠে থাকা পাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়ায় কৃষক তা কাটা-মাড়াই করতে পারছেন না। অনেকে মাড়াই করা ধান শুকাতে পারছেন না। জেলার কিশোরগঞ্জ সদর ইউপির কলকুটি পাড়ার কৃষক রমজান আলী (৪০) ও যদুমনির রওশন আলী (৩০) জানান, সপ্তাহ আগে তারা ধান কাটলেও রোদের অভাবে তা শুকাতে পারছেন না। প্রায় ৪০০ মণ ধান নিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : ফুলবাড়ীতে কালবৈশাখীর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়েছে গাছপালা ও বিদু্যতের খুঁটি। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ভুট্টার খেতসহ আম, লিচু ও কলা বাগানের। ঝড়ের আঘাতে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় ৫০০ পরিবারের ঈদের আনন্দ বিষাদে রূপ নিয়েছে। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ফুলবাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় এই কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। জয়পুরহাট : জয়পুরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৪০টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়লে দেয়ালচাপায় মাসহ দুই শিশুর মৃতু্য এবং ঘর ভেঙে এক বৃদ্ধার মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। সেড ভেঙে প্রায় ৪০ হাজার মুরগি মারা গেছে। প্রায় দুই হাজার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গেছে। শতাধিক গাছ ও বিদু্যতের খুঁটি উপড়ে গেছে। জেলায় বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নিহতরা হলেন ক্ষেতলাল উপজেলার খলিশাগাড়ি গ্রামের দিনমজুর জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী শিল্পী বেগম (২৮), তার দুই সন্তান নেওয়াজ (৮) ও নিয়ামুল (৩) এবং কালাই উপজেলার হারুঞ্জা আকন্দপাড়া গ্রামের মৃত সালামত আলীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৭০)। ধুনট (বগুড়া) : উপজেলায় গত কয়েক দিনের দিনের ভারী বর্ষণে পস্নাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে তলিয়ে গেছে পাকা বোরো ধানের খেত। এ ছাড়া কালবৈশাখী ও ভারী বর্ষণে অপরিপক্ক আম এবং লিচুও বিনষ্ট হয়েছে। বুধবার উপজেলার চৌকিবাড়ী, বেলকুচি, চান্দিয়ার, গোপালনগর ও ভান্ডারবাড়িসহ নিম্নাঞ্চলগুলো পস্নাবিত হওয়ায় ওই অঞ্চলের বোরো ধান খেতগুলো এখন পানির নিচে। চরফ্যাশন (ভোলা) : উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ঘরবাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে। ৫০০ পরিবারের বিদু্যৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মাছের খামার ও পাকা ধানসহ রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুধবার রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ে উপজেলার আবুবক্করপুর, নীলকমল, নুরাবাদ, ওচমানগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নীলকমল ইউনিয়নের চরতোফাজ্জল গ্রামের মাসুদ সিকদার জানান, কালবৈশাখীতে তার ঘরসহ অনেক ঘরবাড়ির চালা উড়ে গেছে। ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : উপজেলায় কালবৈশাখীতে কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঝড় ও মৃদু হাওয়ায় উপজেলার গোমড়া, হলদিবাটা, ফাকরাবাদ, সন্ধাকুড়া, বাকাকুড়া, গজনী, ছোট গজনীসহ সবকটি ইউনিয়ন ও পাহাড়ি অঞ্চলে কমবেশি ঝড়ে গাছপালা ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তাঘাটে ঝড়ে গাছপালা পড়ে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে।