শ্রীপুরে গরুর খামারে করোনার থাবা

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর)
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি গরুর খামার -যাযাদি
ঈদুল আজহায় কোরবানির হাটে গরু বিক্রি নিয়ে এবার চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গরু খামারিরা। কোরবানির হাটের ওপর ভরসা রাখতে না পেরে ধার-দেনায় বড় করা গরুগুলো কসাইদের কাছে বিক্রির চেষ্টা করছেন অনেক খামারি। এতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। লোকসান পুষিয়ে নিতে প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। জানা যায়, জনসংখ্যার চাহিদানুসারে মোট ৫১২ লাখ কেজি গোশতের জন্য ১০ হাজার ৪২২টি প্রাণী প্রয়োজন। সেখানে গরু-ছাগল মিলিয়ে প্রস্তুত রয়েছে ১৫ হাজার ৮১৭টি প্রাণী। ছোট-বড় মিলিয়ে ৫১১০টি ডেইরি খামারে গরু হৃষ্টপুষ্ট প্রকল্প এবং দুধ উৎপাদন চালু আছে। এছাড়া ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে শতাধিক খামার রয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শ্রীপুরের খামারিরা গরু হৃষ্টপুষ্ট প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট ও খামার ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির এখনো এক মাস বাকি থাকলেও হাটগুলোতে গরু উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু বেচা-বিক্রি একদমই নেই। কোরবানিদাতা এবং পাইকার কারোরই দেখা মিলছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শ্রীপুরে কোরবানি পশুর চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশু বিক্রির জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হতো। কিন্তু এবার হাঁকডাক নেই তাদের। খামারিরা বলছেন, ঈদকে সামনে রেখে ধার-দেনা করে বড় করা গরু নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন তারা। কিন্তু করোনায় সে স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ উঠবে না বলেও আশঙ্কা তাদের। উপজেলার টেপিরবাড়ী এলাকার ডায়নামিক অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, তার খামারে ৬০টি উন্নত জাতের গরু আছে। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহমা জাতের ৭টি গরু হৃষ্টপুষ্ট করেছিলেন তিনি। শ্রীপুর খামারি মালিক সমিতির সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ মাসুদ সরকার যায়যায়দিনকে জানান, গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। গরুর পেছনে যত টাকা খরচ হচ্ছে সে টাকাও উঠবে না। সরকার সহযোগিতা করলে খামারিরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন, উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা ছোট-বড় ৫১০টি খামারে গরু পালন করা হয়। তারা সবসময়ই চিকিৎসা-পরামর্শ দিয়ে খামারিদের পাশে আছেন। সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনতে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকার কাজ চলছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।