অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বেকার ২৫০ শ্রমিক

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

মু. জোবায়েদ মলিস্নক বুলবুল, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন কুলি-মজদুররা -যাযাদি
বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে কুলি মজদুর ইউনিয়ন ও স্থানীয় ট্রাক মালিক সমিতির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোড বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রায় আড়াইশ শ্রমিক কাজ করতে না পেরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় অর্ধশত ট্রাক মালামাল পরিবহণ করতে না পেরে অকেজো অবস্থায় রয়েছে। উপার্জন বন্ধ থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন ট্রাক মালিকরাও। জানা গেছে, বিগত ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় কুলি মজদুররা বিচ্ছিন্নভাবে ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোড করত। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় পর্যায়ে কুলি মজদুর ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ সময় সেতুর পশ্চিম ও পূর্বপাড়ে বাসেক (বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ)-এর পরিত্যক্ত জায়গায় কুলি মজদুর ইউনিয়নকে ট্রাক লোড-আনলোড করার মৌখিক অনুমতি দেয় বাসেক। সরেজমিনে দেখা যায়, গত ২৬ মে ঈদুল ফিতরের দিন হওয়ায় ওভারলোড ট্রাকের মালামাল লোড-আনলোড করে কুলি মজদুররা 'কনসোর্টিয়াম'-এর ২০০ টাকা না দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এতে ক্ষুব্দ হয়ে যমুনা শাখা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ও গোহালিয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান 'কনসোর্টিয়াম'-এর জন্য প্রতি ট্রাক থেকে এক হাজার ২০০ টাকা করে দিতে হবে বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে স্থানীয় ট্রাক মালিক সমিতি ও কুলি মজদুর ইউনিয়নের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধ চরম আকার ধারণ করলে কুলি মজদুর ইউনিয়নের শ্রমিকরা ট্রাকের মালামাল লোড-আনলোড বন্ধ করে দেন। কুলি মজদুররা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকের মালামাল লোড-আনলোড করে সংসার চালান। পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালান। ইউপি চেয়ারম্যান একচেটিয়া 'রাজত্ব' করার জন্য কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ঈদুল ফিতরের পরদিন থেকে লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, ওভারলোড ট্রাকের আনলোড করা মালামাল স্থানীয় ট্রাক দিয়ে সেতু পারাপারের জন্যই তারা জমি-জমা বিক্রি করে কিস্তিতে ট্রাক কিনেছেন। তারা লোড-আনলোড বন্ধ করেন নাই। লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় তারা অনেকেই ট্রাকের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। স্থানীয় ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার বলেন, 'আমাদের ৫০টি ট্রাক রয়েছে। লোড-আনলোড না হওয়ায় ৫০টি ট্রাকই অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার পশ্চিমের মাঠে ট্রাকের মালামাল লোড ও আনলোডের কাজ আমি বন্ধ করি নাই। লোড ও আনলোডের কাজ চালু করার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।' তিনি আরও বলেন, কনসোর্টিয়ামের নামে কুলি মজদুরদের টাকা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।