ইলিশের নাগাল না পেয়ে হতাশ চাঁদপুরের জেলেরা

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২০, ০০:০০

আল ইমরান শোভন, চাঁদপুর
চাঁদপুরের নদীতে পাওয়া না গেলেও দক্ষিণাঞ্চল থেকে আমদানি করা ইলিশে ছড়াছড়ি বড়স্টেশন মাছ ঘাট -যাযাদি
শুরু হয়েছে ইলিশের মৌসুম। কিন্তু ইলিশের রাজধানীখ্যাত চাঁদপুরের জেলেদের জালে ধরা দিচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জালে যে পরিমাণে মাছ আসছে, তাতে খরচের টাকাই উঠছে না। ফলে আর্থিক সংকটে হতাশায় ভুগছেন জেলার প্রায় অর্ধ লক্ষ জেলে। ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা বলছেন, করোনা মহামারিতে প্রশাসন ঠিকমত নদীতে নজরদারি করতে পারেনি। তাই এ বছর জাটকার মৌসুমে নির্বিচারে জাটকা নিধন করার ফলে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। যদিও ইলিশ গবেষকের দাবি, আর কিছুদিন পরেই জেলেদের জালে ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দা গ্রামের চলিস্নশোর্ধ জেলে আলী দিদার। প্রায় ৩৫ বছর ধরে নদীতে ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে তারা আর্থিক সংকটে আছেন। এর মধ্যে নদীতে নামলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না। সারাদিন জাল বেয়ে যা মাছ পাওয়া যায়, তা দিয়ে নৌকার জ্বালানি খরচ উঠাতেই কষ্ট হয়ে যায়। আলী দিদারের মতোই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন চাঁদপুরের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জেলে। সদর উপজেলার হানারচর, লক্ষ্ণীপুর এলাকার জেলেরা জানান, জাল ফেলেও ইলিশের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় শূন্য হাতে জাল-নৌকা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের। গত জাটকা মৌসুমে অসাধু জেলে কর্তৃক অবাধে জাটকা নিধনের ফলে ইলিশের উৎপাদন কমেছে বলে মনে করছেন তারা। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবে বরাত বলেন, চাঁদপুরের নদীতে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারিভাবে যে সহায়তা করা হয়েছে তা অপ্রতুল। জনপ্রতিনিধি ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা তাদের সাধ্যমত সহায়তা করার চেষ্টা করছেন। চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান বলেন, মানুষ ঘরবন্দি থাকায় নদী দূষণ অনেকটাই কমে এসেছে। এর প্রভাবে নদীর পানির গুণাগুণ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। নদীর স্রোতধারা বৃদ্ধি ও বেশি বৃষ্টিপাত হলে জেলেরা ইলিশ পাবেন। অন্য বছরের মতো এ বছরও দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তিনি।