সারি বাধা নৌকা, নেই পর্যটক

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

ইমরান হোসেন সুমন, গোয়াইনঘাট (সিলেট)
সিলেটের গোয়াইনঘাটে পর্যটক শূন্য সারি বাধা নৌকা -যাযাদি
প্রকৃতিকন্যা জাফলং। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার উলেস্নখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্র। সারা বছর এই পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের সমাগম লেগেই থাকে। বর্ষাকালে যেন তার সব রূপ-যৌবন নিয়ে হাজির হয়। মেঘালয়ের পাহাড় ঘেষা মায়াবী ঝর্ণা, চারপাশে সবুজের সমারোহ। এসব কিছু দেখেই পর্যটকরা মুগ্ধ হোন। জাফলংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বর্ষায় পর্যটকরা ভিড় করেন এখানে। \হছোট-বড় নৌকা নিয়ে জাফলংয়ে জিরোপয়েন্ট, মায়াবী ঝর্ণা, চা বাগানে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান। আর বেড়াতে আসা পর্যটকদের গাইড আর চলার বাহন নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার কয়েকশ লোক। বর্ষা মৌসুমে পর্যটনকে ঘিরে জেগে উঠে জাফলংয়ের অর্থনীতি। জাফলংয়ের বিভিন্ন বিপণিবিতান, টু্যরিস্ট গাইড, ফটোগ্রাফারসহ কর্মসংস্থান হয় উপজেলার কয়েক-হাজার মানুষের। তবে এবার করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছুই যেন থমকে গেছে। স্থানীয়রা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে নৌকা তৈরি করলেও পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের ঈদ মৌসুমে পর্যটকশূন্য থাকবে প্রকৃতিকন্যা জাফলং। এর আগেও পবিত্র ঈদুল ফিতরেও করোনার কারণে বন্ধ ছিল এই পর্যটন স্পটটি। পর্যটকদের অপেক্ষায় থাকা এসব নৌকা চালকরা বর্ষা মৌসুমে ভালো আয়-রোজগার করে থাকেন। এই আয় দিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে যেতে বেগ পেতে হয় না। বিকল্প এই কর্মসংস্থানে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনাভাইরাসের দুর্যোগের সময় দেশের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি জাফলংয়েও পর্যটকদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে পর্যটকশূন্য। পর্যটকদের মাধ্যমে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ চালিয়ে যায় এসব নৌকা চালকরা। আবার অনেক নৌকা মালিক এনজিও সংস্থার মাধ্যমে ঋণ নিয়ে নৌকা নির্মাণ করেছে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। রোজগারের একমাত্র উৎস বন্ধের উপক্রম হওয়ায় পরিবার এবং ঋণের টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছে নৌকা চালকরা। \হনৌকা মালিক ফজলু রহমান বলেন, 'অনেক টাকা খরচ করে পর্যটকদের জন্য ৪টি নৌকা তৈরি করেছিলাম। করোনা পরিস্থিতির কারণে পর্যটকদের আগমন নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এখন নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্ষায় মৌসুম আয় রোজগারের একমাত্র উৎস এটি। এখন বেকার হয়ে পড়েছি। বিকল্প কোনো কাজ না থাকায় পরিবারের ভরণপোষণে বিপাকে পড়েছি। জাফলং টু্যরিস্ট গাইড ও পর্যটন নৌকা চালক যুব সংঘের সভাপতি বাছির মিয়া বলেন, বর্ষায় জাফলংয়ে পর্যটকদের আনাগোনাকে কেন্দ্রটি করে প্রায় শতাধিক নৌকা আয় রোজগারের সন্ধানে বের হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটকদের আনাগোনা নিষিদ্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে এসব নৌ-যান পেশায় জড়িত লোকজন।