আবাসন ব্যবসায় করোনার থাবা

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা
ক্রমবর্ধমান আবাসন চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাবনায় আবাসন ব্যবসা ব্যাপক প্রসার ঘটে। কিন্তু মরণঘাতী করোনাভাইরাস সে ব্যবসার উপর থাবা বসিয়েছে। সময় মতো ফ্লাট বা দোকান বুঝে দেওয়া বা পাওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। আর ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্টদের ঋণ প্রদান করে কিস্তি আদায় করতে না পেরে অজানা আতঙ্কে রয়েছে। পাবনায় মাসপো রিয়েল এস্টেট, এআর রিয়েল এস্টেট, মানামা ডেভলোপারর্স, পাইল পয়েন্ট ডেভলোপারর্স, রানা ডেভলোপারর্স, পাবনা এক্সপ্রেস কন্সট্রাকশন, জেডএসবি হোমর্সসহ বেশকিছু রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরেই আবাসন ব্যবসা চালিয়ে আসছে। বছর পেরুতেই পাবনায় নতুন নতুন সুউচ্চ বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে। বৈশ্বয়িক করোনাভাইরাসে এই ব্যবসায় নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। সঠিক সময়ে ফ্ল্যাট নির্মাণ করতে না পারা, চুক্তি মোতাবেক ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করা, ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থসহ নানা বিপর্যয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মাসপো রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, 'বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর কারণে সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশে সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে যারা আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত তারাসহ কর্মরতরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের জন্য দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন সেই প্যাকেজের আওতায় আবাসন ব্যবসাকে বিশেষ সুবিধা দিলে এই আবাসন ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। ' জেডএসবি হোমর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার বিপস্নব হোসেন বলেন, 'চলমান করোনা আমাদের ব্যবসায় ছোবল দিয়েছে। চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। করোনার কারণে আমরা যাদের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করেছি, তারা আমাদের ঠিকমত টাকা পরিশোধ করেননি। জমির মালিকের কাছ থেকে সময় বেঁধে কাজ ধরেছি। কিন্তু সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারছি না। তিনি বলেন, এর মধ্যেও কিছুটা কাজ নিজের টাকায় নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করে সম্পন্ন করলেও ফ্ল্যাট ক্রেতার কাছ থেকে সেই অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছি না। তিনি জমির মালিক, ফ্ল্যাট ক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সহনশীলতা প্রত্যাশা করেন। পাশাপাশি এই ব্যবসাকে সামনে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতারও দাবি জানান। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড পাবনা প্রধান শাখার প্রিন্সিপ্যাল অফিসার খলিলুর রহমান বলেন, 'আবাসন প্রকল্পে আমরা ব্যাংক লোন দিয়ে থাকি। করোনাকালীন অধিকাংশ গ্রাহক তাদের নির্ধারিত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে আমরাও গ্রাহক পর্যায়ে কোনো চাপাচাপি করছি না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকের আয় কমে যাবে, কর্মীদের বেতন-ভাতায় ভাটা পড়বে। অর্থনৈতিক চাকায় নেমে আসবে স্থবিরতা।'