কাউনিয়ায় কমেছে পাটের আবাদ

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

মো. মিজানুর রহমান, কাউনিয়া (রংপুর)
রোদে পাট শুকাচ্ছেন কৃষকরা -ফাইল ছবি
রংপুরের কাউনিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে পাটের আবাদ। গত কয়েক মৌসুম ধরে আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চাষিরা পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে হুমকিতে পড়েছে সম্ভাবনায় এ সোনালি আঁশ। গত তিন বছর ধরে আশঙ্কাজনক হারে কমছে পাটের আবাদ। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নে ৮৩০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। কৃষকরা জানান, চলতি বছর প্রায় ৬৪০ হেক্টর বিঘা জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে ১২০০ হেক্টর কম। তারা বলেন, গত তিন বছর ধরে আশঙ্কাজনকভাবে পাটের আবাদ কমছে। চাষিরা জানান, পাট চাষে শ্রমিকের মজুরি, চাষ, বীজ, আগাছা পরিষ্কার, কাটা ও জাগ দেওয়া, আঁশ ছড়ানো, শুকিয়ে বাজারজাত করাসহ সবকিছুতে বেশ খরচ হয়। কিন্তু ভরা মৌসুমে বাজারে পাট বিক্রি করে লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। নাজিরদহ গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিব জানান, পাট চাষে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় গড়ে ৫ মণ। গত বছর প্রতি বিঘায় লোকসান গুনতে হয়েছে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। চান্দঘাট গ্রামের কৃষক সামছুল আলম জানান, গত বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। ভরা মৌসুমে বাজারে কম দামে পাট বিক্রি করে তার প্রায় আট হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। রাজিব গ্রামের কৃষক আহসান হাবিব জানান, পাট চাষ কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। কিন্তু সে তুলনায় দাম পাওয়া যায় না। এ বছর পাটের চাষ কমিয়ে দিয়ে আউশ ধান ও বাদাম চাষ করেছেন। বেইলি ব্রিজ এলাকার কৃষক আকবর আলী জানান, সরকারিভাবে পাট আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সার বীজ দেওয়ার কথা শুনেছেন। কিন্তু প্রকৃত চাষিরা কিছুই পায় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, পাট অধিদপ্তর কৃষকদের পাট আবাদে প্রশিক্ষণ ও সার-বীজ দিয়ে থাকে। কৃষি বিভাগ তাদের সহায়তা করে। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ বাড়লেও ভরা মৌসুমে হাটবাজারে পাটের দাম কম থাকে। ফলে প্রতি বছর সম্ভাবনাময় পাটের আবাদ কমে যাচ্ছে।