আতঙ্কিত বন্যার্তরা

যমুনার চরাঞ্চলে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন

প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

ইমরান হোসেন ইমন, ধুনট (বগুড়া)
বগুড়ার ধুনটে ভ্রাম্যমাণ ড্রেজার দিয়ে চলে বালু উত্তোলন -যাযাদি
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি। তাই বিধবা রহিমা বেগম তার দুই মেয়ে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর শহড়াবাড়ী বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে। তাদের শেষ সম্বল বলতে বৈশাখী চরের স্বামীর বসতভিটা ও কয়েক শতক ফসলি জমি। কিন্তু অর্ধশত ভাসমান ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে যমুনার চরাঞ্চলে বালু উত্তোলন করায় রহিমা বেগমের সে স্বপ্ন এখন ধূলিসাৎ হতে চলেছে। বন্যার পানিতে চরাঞ্চল ডুবে থাকায় ও প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ভূমিদসু্যরা বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করছে। চরাঞ্চলে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনের কবলে পড়েছে রহিমা বেগম, ছকিতন বেওয়া, চাঁন মিয়া ও লাল মিয়াসহ প্রায় শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি। জানা গেছে, বার বার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম যমুনায় বিলীন হয়েছে বহু বছর আগেই। অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে বাঁধ ও চরের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে বাসবাস করছে। সম্প্রতি যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চল। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বৈশাখী চরে বসবাসকারী প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের মধ্যে অনেক পরিবার চরের উঁচু স্থান এবং অন্য পরিবারগুলো শহড়াবাড়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদসু্যরা। প্রায় অর্ধশত লঞ্চ ও নৌকার সঙ্গে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে ভাসমানভাবে যমুনার চরাঞ্চল থেকে বালু উত্তোলন করে নদী পথে বিক্রি করছে তারা। বৈশাখী চরের কৃষক আজিজার রহমান ও চাঁন মিয়া জানান, ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের কিছু প্রভাবশালী মানুষ যমুনার চরাঞ্চলে ভাসমান ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদী পথে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছে। এভাবে বালু উত্তোলন করা হলে বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে চরাঞ্চলের ফসলি জমি ও ঘরবাড়ির কোনো চিহ্নও পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, চরাঞ্চল থেকে বালু উত্তোলন করা হলে ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নিবেন। ধুনটের ইউএনও সঞ্জয় কুমার মোহন্ত বলেন, যমুনার চরাঞ্চল থেকে বালু উত্তোলন করা হলে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।