গ্রামীণ জনপদে গরমে হাসফাঁস থেকে বাঁচতে অন্যতম মাধ্যম ছিল হাতপাখা। যখন গ্রামাঞ্চলে বিদু্যৎ পৌঁছেনি তখন প্রশান্তি পেতে একমাত্র ভরসা ছিল এই হাতপাখায়। সভ্যতার ক্রমবিকাশে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি। তবে বিদু্যৎ বিভ্রাটে এখনো গ্রাম কিংবা শহর সবখানেই মানুষের স্বস্তির অন্যতম মাধ্যম এই হাতপাখা।
সাধারণত এটি বৃত্তাকার হয়ে থাকে। বাঁশ ও বেত দিয়েই মূলত তৈরি করা হয় হাতপাখা। এর সঙ্গে কিছুটা লম্বা আকারের একটি বাঁশের হাতল সংযুক্ত করে তার মধ্যে বাঁশ কিংবা ছোট পাইপ দিয়ে চুঙ্গি দিলেই হয়ে যায় বাতাস দেওয়ার উপযোগী। অনেকে কাপড় বা শক্ত কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নকশা করে দৃষ্টিনন্দন পাখা তৈরি করেন। ঐতিহ্যবাহী হাতপাখার সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে পাখা তৈরির কারিগররাও। কারিগরদের অভিযোগ, পাখা তৈরি করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। তাছাড়া বাঁশও কিনতে হয় চড়া দামে। ২-৩ বছর আগে বেতের বাঁশ ৫০-৬০ টাকায় কেনা গেলেও এখন তার দাম ২০০ থেকে আড়াইশ' টাকা।
জানা গেছে, একযুগ আগেও মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাতপাখার ব্যাপক প্রচলন ছিল। বর্তমানে বৈদু্যতিক পাখার কারণে এর প্রচলন প্রায় নেই বললেই চলে। হাতপাখার কারিগর জমিরুন নেছা জানান, পাখার চাহিদা কমে যাওয়া ও বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় এক বছর আগে থেকেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
প্রবীণ নুরজাহান বেগম (৯৩) যায়যায়দিনকে বলেন, তাদের সময় গরম নিবারণের একমাত্র মাধ্যম ছিল হাতপাখা। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাতপাখার ব্যবহার কমে গেছে। ভবিষ্যতে পাখার ব্যবহার থাকবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।