সাভারে ট্যানারির বর্জ্যে দুর্ভোগে এলাকাবাসী

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

মো. আরজু মীর, সাভার
সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি কারখানার বর্জ্যের উৎকট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ। বাতাসের সঙ্গে গন্ধ ছড়িয়ে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়েরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। চর্ম, শ্বাসকষ্টসহ দেখা দিয়েছে নানা রোগবালাই। সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুরের হরিণধরা এলাকায় বিসিক শিল্প নগরী ট্যানারি অবস্থিত। এখানে আছে ১৫৫টি ট্যানারি কারখানা। কারখানাগুলোতে তরল, কঠিন ও বায়বীয় তিন ধরনের বর্জ্য উৎপন্ন হয়। প্রতিদিনের উৎপাদিত তরল বর্জ্য পরিশোধনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এসব বর্জ্য পরিশোধনে কমপক্ষে দুইটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) প্রয়োজন বলে জানায় এলাকাবাসী। একটি সিইটিপি সচল থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া লবণ কারখানা চালু হওয়ায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষমতা বেড়েছে। ফলে বর্জ্যের পরিমাণও বেড়েছে। কারখানার কঠিন বর্জ্যের মধ্যে আছে- চামড়ার ফেলে দেওয়া অংশ, পশুর খুর, নখ, কান, লেজ, শিং, হাড়, লোম, মাংসের ঝিলিস্ন ইত্যাদি। ডাম্পিং ইয়ার্ডে এগুলো ফেলা হয়। মাত্র ছয় একর জমিতে ডাম্পিং ইয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানেই ট্যানারির বর্জ্য ফেলা হয়। সেগুলোর দুর্গন্ধে ঝাউচর এলাকাবাসীর টিকে থাকায় দুরূহ হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব কারণে ঝাউচর এলাকা থেকে ভাড়াটিয়ারাও চলে যাচ্ছেন। চামড়া শিল্পনগরীর বর্জ্যে বংশী, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদের পানি দূষিত হচ্ছে। এর মধ্যে বংশী ও ধলেশ্বরীর পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে। এ দুই নদীর সঙ্গে অন্য চার নদ-নদীর সংযোগ থাকায় সেগুলোর পানিও দূষিত হচ্ছে। এসব নদীতে মাছ নেই বললেই চলে, জলজ উদ্ভিদেরও অস্তিত্ব বিপন্ন। নদী পারের স্বল্প আয়ের মানুষের জীবিকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কুমিলস্না ট্যানারির মালিক মাহবুবুল ইসলাম জানান, এখন বড় সমস্যা হলো বায়ার কম, চায়না ছাড়া অন্য কোনো বায়ার আসছে না। আগের মালগুলোও এখনো বিক্রি করা যায়নি। ট্যানারি প্রকল্প পরিচালক জিতেন্দ্র নাথ পাল দৈনিক যায়যায়দিনকে বলেন, নির্মাণাধীন ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি হয়ে গেলে আগের স্থানে আর ডাম্পিং করা হবে না।