আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে মধ্যপাড়া পাথরখনিতে

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

মো. রজব আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
আবারও কর্মচঞ্চলতায় ফিরেছে দেশের একমাত্র ভূ-গর্ভ থেকে উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথরখনি। খনিতে কর্মরত শ্রমিক, পাথর ব্যবস্যায়ী আর পরিবহণ শ্রমিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে খনি এলাকা। করোনার কারণে চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার খনি থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোদমে তিন শিফটে পাথর উত্তোলন শুরু করেছে খনিটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-টেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। বৃহস্পতিবার খনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খনির প্রধান গেটের সামনে সারি সারি পাথরবাহী ট্রাক। প্রধান ফটকের সামনে পাথর ব্যবস্যায়ী, পাথর লোড আনলোড শ্রমিকসহ নানা প্রকার ছোট ছোট চা-বিস্কুটের দোকান পসরা বসিয়েছে। খনি সূত্রে জানা গেছে, খনিটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি খনি থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে খনিটির উৎপাদন ইতিহাসে নয়া রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ফলে পাথর খনিটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান থেকে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, মধ্যপাড়া পাথরখনির রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদনের দায়িত্বে নিয়োজিত বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির সঙ্গে চুক্তির পর মধ্যপাড়া পাথরখনি থেকে পাথর উত্তোলনের রেকর্ড গড়ে। এ কারণে গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মধ্যপাড়া পাথরখনিটি প্রথমবারের মতো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। সূত্রটি জানায়, দেশের উন্নয়নে মধ্যপাড়া পাথরখনির পাথর ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে খনির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূতত্ত্ববিদ এবিএম কামরুজ্জামানের দিকনির্দেশনায় পাথর উত্তোলনকে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জিটিসি প্রথম শিফট এবং পরে দ্বিতীয় শিফটে পাথর উৎপদান শুরু করে। মাসিক এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খনিটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি বুধবার থেকে তিন শিফটে পুরাদমে পাথর উত্তোলন ও খনির ভূ-গর্ভের উন্নয়নকাজ শুরু করেছে। জিটিসির পরিচালক জাবেদ সিদ্দিক বলেন, চুক্তি পূরণ ও দেশের স্বার্থে মধ্যপাড়া খনিতে সর্বোচ্চ পাথর উত্তোলনে জিটিসি অঙ্গিকারবদ্ধ। তিনি বলেন, জিটিসি শুরু থেকে চুক্তি অনুয়ায়ী, সর্বোচ্চ পাথর উত্তোলন করে খনিটির পাথর উৎপাদনের ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আগামীতেও একইভাবে জিটিসি কাজ করতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান। মধ্যপাড়া পাথরখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূ-তত্ত্ববিদ এবিএম কামরুজ্জামান বলেন, খনিটিতে দ্বিতীয় কূপ খননের জন্য ইতোমধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। সরকারি অনুমতি এলেই দ্বিতীয় কূপের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় কূপটি চালু করা হলে প্রতিদিন এই খনি থেকে সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা সম্ভব হবে।