করোনা প্রতিরোধে বরিশাল সিভিল সার্জনের নানা পদক্ষেপ

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

বরিশাল অফিস
কোভিট-১৯ ভাইরাস সংক্রমণরোধে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের নানা উদ্যোগ মাঠ পর্যায় ফল পেতে শুরু করেছে। জেলায় কমতে শুরু করেছে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালে কোভিট-১৯ ইউনিট থাকলেও গত প্রায় দুই মাসেও সেখানে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি বলে সিভিল সার্জন দপ্তর জানিয়েছে। অবশ্য এটা মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির সুফল বলে মনে করেন সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই জেলা সদর হাসপাতালসহ ১০ উপজেলায় ৪২টি স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি এ ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে জেলা সদর, উপজেলা, ইউনিয়ন এলাকায় লিফলেট ও মাইকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করা হয়। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। তারা আবার স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন। করোনা চিকিৎসা মনিটরিং ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়ের লক্ষে জেলা সিভিল সার্জন একটি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রম্নপ উন্মুক্ত করেন। এমন কি করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাজ করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় কয়েকটি সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। এসব সংগঠনের মধ্যে রয়েছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ও আঞ্জুমান-ই-হেমায়েতুল ইসলাম। করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা বেগবান করতে জেলায় ২৭ জন নতুন চিকিৎসক পদায়ন করা হয়। যদিও এ নিয়োগের পরও ১০ উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে মঞ্জুরিকৃত ২২২টির বিপরীতে রয়েছেন ১৪৪ জন। তারপরও ৭৮টি শূন্য পদ নিয়েই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আসছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে ভালো রয়েছে বরিশাল সদর হাসপাতালের জনবল কাঠামো। একশ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে মঞ্জুরিকৃত ৩৩টি চিকিৎসক পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে মাত্র ৪টি। আর মঞ্জুরিকৃত ১৮৩ জন সেবিকার বিপরীতে ডেপুটেশন নিয়ে আরও বেশি সংখ্যক কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, মানুষ বুঝে ফেলেছেন এ রোগে আক্রান্ত হলে বাড়ি থেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে যদি কেউ শাসকষ্ট বা অন্য রোগে আক্রান্ত হন শুধুমাত্র তাদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। গত কয়েক মাস থেকেই সংক্রমণ ও মৃতু্যর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে দাবি করে সিভিল সার্জন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার কারণেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তবে শীতকালে এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। এ পর্যন্ত জেলায় সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৪৩৬ জন করোনা আক্রান্ত হন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩২ জন। আর মৃতু্যবরণ করেছেন ৬৭ জন। আক্রান্তর এ সংখ্যা জুলাই মাস থেকে কমতে শুরু করেছে। জুলাই মাসে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩৯ জন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আগস্টে তা ২৯ জনে নেমে আসে। আর সেপ্টেম্বরে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ জন আক্রান্তর রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ৯ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন।