দেবীর বোধনে শুরু দুর্গাপূজা

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
মহা ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে নীলফামারীর জলঢাকায় শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে -যাযাদি
বৃহস্পতিবার সারাদেশে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। করোনা পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে সরকারি নির্দেশনা মেনে এ উৎসব শুরু হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন দরিদ্রদের মাঝে শাড়ি লুঙ্গিসহ বস্ত্র বিতরণ করে। স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : কক্সবাজার :সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব করোনা সংকটের কারণে এবার কক্সবাজার জেলায় ২৯৯টি মন্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জেলায় ১৪৪টি প্রতিমা ও ১৫৫টি ঘটপূজা রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, পৌরসভাসহ চকরিয়া উপজেলায় ৪৬টি প্রতিমা ও ৪২টি ঘট, পেকুয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা ও ৭টি ঘট, রামু উপজেলায় ২০টি প্রতিমা ও ১০টি ঘট, সদর উপজেলায় ৩৪টি প্রতিমা ও ২০টি ঘটপূজা, কক্সবাজার পৌরসভা ১১টি প্রতিমা ও ৯টি ঘটপূজা, উখিয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা ও ৮টি ঘট, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১৩টি প্রতিমা, ২৯টি ঘট, মহেশখালীতে ১টি প্রতিমা ও ৩০টি ঘট ও টেকনাফ উপজেলায় শুধু ৬টি প্রতিমা পূজা হচ্ছে। রাজশাহী :রাজশাহীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। এবার হচ্ছে না মেলা, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর মন্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা থাকলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি মন্ডপগুলোতে। মাস্ক ছাড়াই ভক্তরা আসছেন পূজা দিতে। রাজশাহীতে এবার জেলা ও মহানগর মিলে ৪০৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে নগরীতে ৭০টি। মন্ডপগুলোতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) :সিরাজদিখানে দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৩৩২ জন হতদরিদ্রের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাইজিং স্টার সোশ্যাল ক্লাবের পক্ষ থেকে এ বস্ত্র বিতরণ করা হয়। সংগঠনের কার্যালয় উপজেলার মালখানগর থেকে ২৫৭টি শাড়ি, ২৫টি লুঙ্গি ও ৫০টি থ্রি পিস দেওয়া হয়েছে। এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ। লালপুর (নাটোর) :শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে নাটোরের লালপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ২০০ জনের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ লালপুর উপজেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী। লালপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন কুমার ভদ্রের সভাপতিত্বে গোপালপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন, লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন আক্তার বানু, লালপুর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ পরিমল কুমার কুন্ডু প্রমুখ। ভাঙ্গুড়া (পাবনা) :পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবে ব্যক্তি উদ্যোগে শতাধিক শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেছেন ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্দুস সামাদ। বৃহস্পতিবার মহা ষষ্ঠীর দিনে সকালে এই ওয়ার্ডের দুস্থ ও গরিব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তিনি শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন। জানা গেছে, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় এই ওয়ার্ডের দুস্থ ও গরিব হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারে সদস্যদের মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে শতাধিক শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন। এ সময় ভাঙ্গুড়া উপজেলার পূজা উদযাপনের সভাপতি মলয় কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক সংগীত কুমার পাল, দক্ষিণ মেন্দা কালিবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি সুভাষ কুমার পাল, সাংবাদিক বিকাশ কুমার চন্দ্র উপস্থিত ছিলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ :চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহা ষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। বেলা ১১টার পর বিভিন্ন মন্ডপে শুরু হয় ষষ্ঠী পূজা। জেলায় এবার ১৩৬টি মন্ডপে উদযাপিত হবে দুর্গোৎসব। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২৬ বিধি-নিষেধ মেনে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় চ্যাটার্জি জানান, এবার মন্ডপের বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করতে হবে দর্শণার্থীদের। এছাড়া মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক, সন্ধ্যা ৬টার পরে প্রতিমা দর্শন বন্ধসহ ২৬টি বিধি-নিষেধের কথা মাথায় রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে মন্ডপে মন্ডপে। জলঢাকা (নীলফামারী) :নীলফামারীর জলঢাকায় ১৭৫টি মন্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে দুর্গোৎসবকে ঘিরে পূজামন্ডপগুলোকে আকর্ষণ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্ট মন্দির কমিটির লোকজন। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জোতিষ চন্দ্র সরকার বলেন, 'এবার উপজেলায় ১৭৫টি পূজামন্ডপে দুর্গোৎসব চলবে।' শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ৬৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গা দেবীর পূজা শুরু হয়। ইউনিয়ন অনুযায়ী পূজার সংখ্যা হলো- ভূরুলিয়া ৩টি, কাশিমাড়ী ২টি, শ্যামনগর ৯টি, নুরনগর ৩টি, কৈখালী ৫টি, রমজাননগর ৭টি, মুন্সীগঞ্জ ১০টি, ঈশ্বরীপুর ৪টি, বুড়িগোয়ালিনী ৯টি, আটুলিয়া ৯টি, পদ্মপুকুর ২টি ও গাবুরায় ২টি। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এবার প্রতিটি মন্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল সরকারি সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রশাসন।