শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সিন্ধিয়াঘাট রেস্ট হাউজ আসছে পুরনো আদলে

এস এম নজরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
  ২৪ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

গোপালগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিন্ধিয়াঘাট নৌ-রেস্ট হাউজটি পুরানো আদলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জরাজীর্ণ ডাকবাংলোটি ইতোমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে, নির্মাণ করা হবে বাউন্ডারি ওয়াল ও ওয়াকওয়ে। লাগানো হবে বিভিন্ন শোভা বর্ধনকারী গাছ। পাউবোর জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হবে।

গোপালগঞ্জ-১ আসনের এমপি কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান জানান, আগামী প্রজন্ম যাতে জাতির পিতা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারে, তার আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে, তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কারিগর হতে পারে, সেজন্য সিন্ধিয়াঘাট রেস্ট হাউজটি সংস্কার করে পুরানো আদলে ফিরিয়ে আনার জন্য গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিন্ধিয়াঘাট নৌ-রেস্ট হাউজটিতে রয়েছে অনেক স্মৃতিচিহ্ন। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের আগে ও পরে জাতির পিতা ফরিদপুর আদালতে হাজিরা দিতে এবং সাংগঠনিক সফরে নৌ-পথে টুঙ্গিপাড়া থেকে ফরিদপুর যেতেন এই নৌপথে। মামলার তারিখের আগের দিন বা সাংগঠনিক মিটিংয়ের আগে বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া থেকে নৌপথে এমবিআর চ্যানেল হয়ে মুকসুদপুরের সিন্ধিয়াঘাট রেস্ট হাউজে উঠতেন। এখানে তিনি রাত্রিযাপন করতেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করতেন। তাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা দিক-নির্দেশনা দিতেন। সে সময়ে সিন্ধিয়াঘাট নৌ-ফাড়ির পুলিশ ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জাতির পিতার নিরাপত্তায় থাকতেন। পরদিন জাতির পিতা ওই রেস্ট হাউজ থেকে আবার নৌপথে ফরিদপুর গিয়ে মামলায় হাজিরা দিতেন বা সাংগঠনিক কাজে যোগ দিতেন।

বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসা স্থানীয় ফতেপুর গ্রামের বেশ কিছু মুরব্বী এখনো বেঁচে আছেন। তাদের মধ্যে আ. ছত্তার শেখ (৭৫), মো. গাউস শেখ (৬৫), মো. হেলাল মলিস্নক (৭৮), সিরাজুল মোড়ল (৮০), মো. গফ্‌ফার মলিস্নক (৭০) ও মো. কুদ্দুস শেখের (৭৬) সাথে কথা হয়। জাতির পিতার সে সময়ের রাজনীতির সাক্ষী আজকের প্রবীণরা জানান, ৬৯, ৭০, ৭১-এর দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়া থেকে ফরিদপুর যাওয়ার সময়ে তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহাকুমার সিন্ধিয়াঘাট নৌ-ডাকবাংলোয় উঠতেন। বঙ্গবন্ধুর আগমনের সংবাদ পেয়ে স্থানীয় লোকজন তার কাছে আসতেন, বসতেন, তার সাথে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে মিটিং করতেন। সে সময়ে তিনি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে, দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তি, মুক্তিযুদ্ধ করার বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করতেন। দেশপ্রেমের জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন। আর বলতেন, পাকিস্তানি রাজাকাররা দেশটাকে দখল করে ফেলেছে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করতে হবে।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেছেন, 'আমরা ইতোমধ্যে নৌ-ডাকবাংলো ঘরটি সংস্কার করেছি। ডাকবাংলোর সামনে নদীতে একটি সুদৃশ্য ঘাটলা নির্মাণ করব, বাউন্ডারি ওয়াল দিব, শোভাবর্ধনকারী গাছ রোপণ করব। আমাদের কাছে সংরক্ষিত জাতির জনক যে চেয়ারে বসতেন বা যেসব জিনিস ব্যবহার করতেন সেগুলো ওই রেস্ট হাউজে জাতির জনকের স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116305 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1