বিল কপালিয়া ও ফুলবাড়ীতে জলাবদ্ধতার অবসান

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পানি নিষ্কাশনের ক্যানেল খনন পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম -যাযাদি
যশোরের ভবদহের জলাবদ্ধ বিল কপালিয়ার মানুষ নিজেদের উদ্যোগে সেচ পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছেন। অন্যদিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিরসন করা হয়েছে সাত গ্রামের ৯০০ হেক্টর জমির জলাবদ্ধতা। মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জি. এম ফারুক আলম ও ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি রজব আলীর পাঠানো খবর- মনিরামপুর (যশোর) : মরণফাঁদ ভবদহের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে বছরের পর বছর বিলে ধান চাষ করতে না পারা নিঃস্ব বিলপাড়ের মানুষ নিজেদের অর্থে স্থাপন করেছেন সেচ পাম্প। যশোরের দুই উপজেলার (মনিরামপুর ও অভিয়নগর) জলাবদ্ধ বিল কপালিয়ার ভুক্তভোগীরা বিল থেকে সেচ পাম্পে পানি সরিয়ে আগামী বোরো মৌসুমে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের স্বপ্ন দেখছেন। অবশ্য পাম্প চালুর শুরুতে বিদু্যৎ সংযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আপত্তি জানায়। পাম্পে বিদু্যৎ সংযোগ না দিতে যশোর পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি ২-কে (যপবিস) আপত্তিপত্র দেয় তারা। পাউবোর আপত্তিতে পাম্পে বিদু্যৎ সংযোগ দিতে দেরি হয়। পরে যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য ও যশোর-৬ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের প্রচেষ্টায় পাম্পে বিদু্যৎ সংযোগ দেওয়া হয়। পাম্প কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মশিয়ূর রহমান জানান, গ্রামবাসীর সম্মিলিত অর্থে পাম্পটি স্থাপিত হয়েছে। সম্প্রতি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার ভবদহ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পাম্প স্থাপনের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি ভবদহ সস্নুইচ গেটে পাম্প স্থাপনে যাচাই-বাছাই করতে জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাউবোর যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প স্থাপনে ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। ভবদহ ও সংলগ্ন এলাকা থেকে পানি সরাতে ও আগামী বোরো মৌসুমে ধান চাষের জন্য উপযোগী করতে মন্ত্রণালয় থেকে দ্রম্নত অনুমোদন করিয়ে কাজ শুরু হবে। ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার সাত গ্রামের ৯০০ একর ফসলি জমির জলাবদ্ধতার অবসান হয়েছে। মূলত জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলমের হস্তক্ষেপে দীর্ঘ চার বছরের এ কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন তারা। জলাবদ্ধতার কারণে ৯০০ একর জমি অনাবাদি থাকার পর পানি নিষ্কাশন শুরু হওয়ায় হাসি ফুটেছে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ৭ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষকের মুখে। শনিবার উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম উপস্থিত থেকে ক্যানেলটি খনন করে স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশনের রাস্তা তৈরি করেন। এ সময় ফুলবাড়ীর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন, বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খায়রুল আলম সুমন, সদ্য যোগদানকারী ইউএনও রিয়াজ উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ আফরোজসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ভূমি মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, বারাই পাড়া গ্রামের হারুনুর রশিদ নামে এক কলেজ প্রভাষক তার অনুসারীদের নিয়ে ক্যানেল খনন কাজে বাধা দিতে গেলে জনরোষের মুখে পড়েন। এ সময় জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ইউএনও খায়রুল আলম সুমন যায়যায়দিনকে বলেন, ফসল উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশনের রাস্তা তৈরি করা হলো। এ বিষয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম যায়যায়দিনকে বলেন, মাত্র এক হাজার ফিট ক্যানেলের জন্য চার বছর ধরে জলাবদ্ধ হয়েছিল খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের ৭ গ্রামের ৯০০ একর জমি। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন পানি নিষ্কাশনে ক্যানেল খননের উদ্যোগ নেয়।