তিন পৌরসভা নির্বাচনের হাওয়া কুড়িগ্রামে

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

মমিনুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম
তফসিল ঘোষণার আগেই কুড়িগ্রামে তিনটি পৌরসভায় নির্বাচনের ভোটের পালে আগাম হাওয়া বইতে শুরু করেছে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানামুখী প্রচারণায় ক্রমশ উৎসবমুখর হয়ে উঠছে এসব পৌর এলাকা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মিছিল, সেস্নাগানে সরগরম হয়ে উঠছে এলাকাগুলো। পৌর বাজারের অলিগলি ও চায়ের দোকানে নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে আলাপচারিতায় সাধারণ ভোটাররা নিজেদের হিসাব-নিকাশ কষছেন। প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। প্রথম শ্রেণির এ তিনটি পৌরসভার মধ্যে উলিপুর পৌরসভায় নারী-পুরুষ সম্মিলিত মোট ৩৩ হাজার ৭২০ জন ভোটার। কুড়িগ্রাম পৌরসভায় ৫১ হাজার ৭২০ এবং নাগেশ্বরী পৌরসভায় মোট ভোটার প্রায় ৩০ হাজার। প্রার্থীদের ছবিসহ রঙিন শুভেচ্ছা পোস্টার, পিভিসি, পস্ন্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে ভরে গেছে পৌরসভার অলিগলি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রার্থীর পক্ষে বাহারি প্রচারণাও চোখে পড়ার মতো। সমর্থন পেতে বর্তমান ও সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের দলীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে দৌড়ঝাঁপও চলছে সমান তালে। এছাড়া তাদের সমর্থনে ওয়ার্ডের সমর্থকরাও ডিজিটাল প্রিন্টের পোস্টার-ব্যানার-পস্ন্যাকার্ড দিয়ে দলীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যে প্রার্থী বাছাই কাজ শুরু করে দিয়েছে। বাদ যাচ্ছে না স্বতন্ত্র প্রার্থীর তৎপরতাও। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিন পৌরসভায় একাধিক মেয়র প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তিনটি পৌরসভার ২৭টি ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। উলিপুর পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে যারা মাঠে আছেন, তারা হলেন- বর্তমান মেয়র ও কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহসভাপতি তারিক আবুল আলা চৌধুরী, সাবেক মেয়র ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হায়দার আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নিমাই চন্দ সিং, জেলা পরিষদের সদস্য ফরহাদ মোলস্না, সাবেক ছাত্রনেতা মিঠু, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা ডা. উম্মর, সাবেক ছাত্রনেতা মোশারফ হোসেন, সাজ্জাদুর রহমান সাজু তালুকদার ও পৌর কমিশনার আনিসুর রহমান। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতি শিউলীর নামও শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল, আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাজু, সাবেক পৌর মেয়র মো. কাজিউল ইসলামের নাম শোনা যাচ্ছে। তাছাড়া সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আবু বকর সিদ্দিক, সাবেক মেয়র নুর ইসলাম নুরু, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বিপস্নব রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার দৌড়ে। এদিকে নাগেশ্বরী পৌরসভায় বর্তমান মেয়র জাতীয় পার্টির নেতা মো. আব্দুর রহমান মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাকু, ফরহাদ হোসেন ধলু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবুল কাশেম সরকারের কথা বলছেন তাদের সমর্থকরা। পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন মঞ্জু জানান, জেলা আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থীর তালিকা সুপারিশসহ কেন্দ্রে পাঠাবে। কেন্দ্রীয়ভাবে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে দল তার পক্ষেই কাজ করবে। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা জানান, পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত দলের কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত পেলেই প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করে জানানো হবে। নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকা বিএনপি বর্তমানে নড়চড়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপির একক কাউন্সিলর প্রার্থী ও পৌরসভায় একক মেয়র প্রার্থী করতে দফায় দফায় বৈঠক করা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের তৎপরতা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।