সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি ডিসেম্বরে। এরপরই নির্বাচন। আর আসন্ন নির্বাচন ঘিরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পৌর এলাকায়। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠে-ময়দানে ও পাড়া-মহলস্নাসহ বিভিন্ন দোকানপাট, মার্কেটে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আগাম দেখা করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। সমর্থন আদায়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রম্নতি।
ঘুরে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দৌড়ঝাপ চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে। পৌরসভায় মেয়র পদে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন পেতে বিএনপির প্রার্থীরাও বসে নেই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া প্রার্থনাসহ বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে লবিংয়ের পাশাপাশি এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক গণসংযোগ চালাচ্ছেন। সেইসঙ্গে বসে নেই বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলরাও। বিগত বছরের অর্জনের ফিরিস্তি তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে সমর্থন চাইছেন ভোটারদের কাছে।
সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী মেয়র প্রার্থী রয়েছেন ৭ জন। তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান, সহ-সভাপতি ও বর্তমান মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক দানি মোলস্না।
এদিকে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন ৫ জন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর কায়েম সবুজ, রাশিদুল হাসান রঞ্জন, মুন্সি জাহিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান। মেয়র পদে জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবুর নামও শোনা যাচ্ছে।
অন্য দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণাসহ কোনো গণসংযোগ দেখা না গেলেও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান জানান, তিনি নিজে মেয়র প্রার্থী। তারপরও কেন্দ্রীয়ভাবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে জয়ী করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, কেন্দ্র থেকে পৌরসভা নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে দলের অনেকেই মনোনয়নের আশায় মাঠে সরব হয়েছেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্যই কাজ করবে নেতাকর্মীরা।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, এই পৌরসভায় বিএনপির সমর্থক বেশি রয়েছে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। তিনি আশা করেন দল মনোনয়ন দিলে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হবেন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, জেলায় ৭টি পৌরসভার মধ্যে শাহজাদপুর বাদে বাকি ৬টিতে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বর্তমান মেয়রদের মেয়াদের পাঁচ বছর শেষ হতে যাওয়ায় এসব পৌরসভায় ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।