দিনে কড়া রোদ থাকলেও রাতে হিমালয়ের বাতাসে শীতের কাঁপন

প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

মো. আব্দুল কাইউম, পঞ্চগড়
হেমন্তেই দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। গত এক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস রেকর্ড করছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দিনের বেলা কড়া রোদের কারণে শীত অনুভূত না হলেও বিকাল হতেই উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে থাকায় রাত বাড়তেই শীতে কাবু হচ্ছে এ অঞ্চলের শীতার্ত মানুষ। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারদিক। কনকনে শীতল হাওয়ার কারণে রাত ৯টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বাজার-ঘাট। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায়। সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এর মধ্যে গত ২৩ ও ২৭ নভেম্বর দুই দিন বাদে বাকি সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড হয় তেঁতুলিয়ায়। আবহাওয়াবিদদের মতে, পঞ্চগড়সহ উত্তরের কয়েকটি জেলা হিমালয়ের খুব কাছে অবস্থিত। উত্তরের সাইবেরিয়া থেকে কনকনে শীতল হাওয়া দক্ষিণে এসে হিমালয় পর্বতে ধাক্কা লাগছে। হিমালয়ের বরফে ধাক্কা লেগে সেই বাতাস দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে উত্তর দিক থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সে কারণেই দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে পঞ্চগড়সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। এদিকে দিনে কড়া রোদ আর রাতের দিকে প্রচন্ড শীতের কারণে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালমুখী হচ্ছে। এ কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে আসছেন। তবে তুলনামূলকভাবে ভালো থাকায় তাদের অধিকাংশকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে না। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। দিনে রোদ ও রাতে বেশি ঠান্ডা থাকায় শিশু ও বৃদ্ধদের ব্যাপারে আরও যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, গত এক মাস ধরে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। হিমালয়ের খুব কাছে অবস্থান হওয়ায় এই সময়টাতে উত্তরের সাইবেরিয়ান বাতাস হিমালয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সরাসরি বাংলাদেশে ঢুকছে। পঞ্চগড় ছাড়াও পাশের দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম অন্যদিকে সিলেট অঞ্চল দিয়েও এই বাতাস প্রবেশ করছে। তবে সবচেয়ে বেশি তেঁতুলিয়া দিয়ে এই বাতাস প্রবেশ করায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।