শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চকরিয়ায় ফুটপাতে রমরমা বাণিজ্য

ম মুহাম্মদ মনজুর আলম, চকরিয়া (কক্সবাজার)
  ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থাপনা, ভাসমান দোকান ও গাড়িস্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গা- সোসাইটি এখন ভয়াবহ যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক শহর চিরিঙ্গা-সোসাইটিতে কিছুদিন পর পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও তা কাজে আসছে না।

চকরিয়া পৌরশহরে গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল মার্কেট, বহুমুখী বাণিজ্যিক ও নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ কারণে সরকার ১৯৯৪ সালে চকরিয়া পৌর এলাকাকে পৌরসভায় উন্নীত করে। প্রতিষ্ঠার পর ইতোমধ্যে ২৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও যানজটের ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পাচ্ছেন পৌরবাসীসহ সর্বসাধারণ। পৌরশহরে বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ির পার্কিং এবং ফুটপাতে ভাসমান হকারদের দখলে থাকার কারণে দীর্ঘ যানজট লেগে রয়েছে প্রতিদিন।

অবশ্য পৌরশহরের যানজটের এই অভিশাপ থেকে সর্বসাধারণকে রেহাই দিতে দুইযুগ আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পৌরশহরের পুরনো এস আলম কাউন্টার থেকে থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত মূল সড়ককে ভাগ করে ত্রি-ওয়ে সড়ক নির্মাণ করে। সেই সময় মহাসড়কের দুপাশে দুটি ওয়ানওয়ে রোড নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে নির্মাণ করেন পৌরবাস টার্মিনাল। উদ্দেশ্য ছিল পৌরশহর থেকে যানজট দূর করা।

চকরিয়া শহর থেকে অনতিদূরে শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনাল নির্মিত হওয়ার পর পৌরবাসী মনে করেছিলেন যানজটের ভয়াবহতা কমে আসবে। কিন্তু শহরজুড়ে ভাসমান হকার, লোকাল বাসস্ট্যান্ড, রিকশা, সিএনজি, চাঁদেরগাড়ি, টমটম গাড়ির দখলে চলে যাওয়ায় কার্যত শহর থেকে সহজে যানজট নিরসন হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত তা পালস্না দিয়ে বেড়েই চলছে।

অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় প্রভাবশালী লোকজন মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে ভাসমান হকারদের বসার সুযোগ করে দেয়। বেশ কয়েকজন হকার বলেন, আমরা টাকা দিয়ে 'অনুমতি' নিয়ে দোকান খুলে ব্যবসা করছি। প্রশাসন মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ করলেও ফের আমরা ঠিকই দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারি।

জানা গেছে, চকরিয়া শপিং কমপেস্নক্সের সামনে বরইতলীগামী সিএনসি ও প্রাইভেট মাইক্রোবাস, পুরনো এসআলম কাউন্টারের সামনে দূরপালস্নার যানবাহন, ট্রাক, পিকআপ, বাস, মাইক্রোবাস এবং চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের সামনে বদরখালীগামী চাঁদেরগাড়ি ও সিএনজি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়া রাস্তার উভয় পাশে ভাসমান হকার বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে। ফলে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রী অফিসগামী লোক, হাসপাতালগামী রোগীসহ সর্বসাধারণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

উলেস্নখ্য, চকরিয়ার চিরিঙ্গা বাণিজ্যিক কেন্দ্রের মার্কেটগুলো গড়ে উঠেছে মহাসড়ক ঘেঁষেই। এখানে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক, বিমা, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, 'ফুটপাতে যারা ব্যবসা করেন তারা সবাই গরিব। এরপরও কোনো অবস্থাতেই চিরিঙ্গা-সোসাইটিকে যানজটের শহরে পরিণত হতে দেওয়া হবে না। সাধারণ মানুষের চলাচলে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কাঁচামালের আড়তগুলো শহর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে