পানিতে ভাসমান বীজতলা

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে বীজতলা পরিদশর্ন করছেন কৃষি কমর্কতার্রা Ñযাযাদি
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বন্যা ও জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলোয় জলবায়ু পরিবতর্ন অভিযোজন কৌশল নিয়ে ভাসমান শেডে বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। নতুন এই পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং উপজেলার যেসব নিচু এলাকায় প্রতি বছর বন্যা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সেসব এলাকার কৃষকদের মাঝে আশার আলো দেখা দিয়েছে। এতদিন যেসব কৃষক বষার্র সময় তাদের জমিগুলোর জন্য সময়মতো বীজতলা তৈরি করতে পারত না, নতুন এই পদ্ধতির ফলে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে ওইসব কৃষক। সিরাজগঞ্জ সদর, তাড়াশ, শাহাজাদপুর ও কাজীপুর উপজেলার বন্যাপ্রবণ এলাকার কৃষকেরা জানান, নতুন এই পদ্ধতিতে এ বছর যেসব ভাসমান চারার শেড তৈরি করা হয়েছে সেগুলোতে বেশ ভালো চারা উৎপাদন হয়েছে। আগামীতে তারা নিজেরাই এই ভাসমান শেড তৈরি করে চারা উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি অন্যান্য এলাকাতে সরবরাহ করতে পারবেন। এতে করে বষার্ মৌসুমে ওইসব উপজেলায় যে চারা সংকট দেখা দেয় সে সংকট আর থাকবে না বলে তারা আশাবাদব্যক্ত করেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শাহানগাছা গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, তাদের এলাকায় প্রতি বছরই বন্যা হয়। যে কারণে তারা সময়মতো বীজতলা তৈরি করতে পারেন না। তাই ঠিকমতো আবাদও করতে পারতেন না। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কমর্কতার্ মো. রোস্তম আলী জানান, প্রণোদনা কমর্সূচির আওতায় এই উপজেলায় ১০টি ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। নাবি জাতের বিআর -২২ ধানের বীজ ব্যবহার করা হয়েছে। এই বীজতলা তৈরি করতে কঁাচা কচুরিপানা, বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ ও কলাগাছ দিয়ে শেড তৈরি করতে হয়। এই সব শেডে অংকুরিত বীজ বুনতে হয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা উৎপাদিত হয়ে রোপণের উপযোগী হয়। এতে খরচ নেই বললেই চলে। পানি থাকাকালীন অবস্থায় এই শেড পানিতে ভাসিয়ে রাখা যায়। আবার পানি শুকিয়ে গেলে জমিতেও রাখা যায়। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আরশেদ আলী জানান, এটি একটি আপৎকালীন প্রযুক্তি। কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এই ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।