একতারায় বাজছে জীবিকার সুর

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

শ্রীপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা
হুজুর আলী সঁাই
মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার জোকা গ্রামের বাসিন্দা অতিদরিদ্র হুজুর আলী সঁাই। একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে সংসার চালান। ভোর হলেই তিনি পেটের ধান্ধায় হাতে একতারা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এ বৃদ্ধ বয়সে হুজুর আলী গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরেফিরে একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে দশর্কদের মনে স্থান করে নিয়েছেন। গান গাওয়াতে তার কোনো ক্লান্তি নেই। কেউ গান শুনতে চাইলেই তিনি হাতে একতারা তুলে নিয়ে গান গাইতে শুরু করেন। আথির্ক সংগতি না থাকায় তিনি উন্নতমানের একতারা কিনতে না পারলেও থেমে থাকেনি তার জীবন। বেছে নিলেন পাকা লাঊয়ের খোল, বঁাশ আর চিকন তার। আর তা দিয়েই নিজ হাতে তৈরি করে নিলেন একটি দেশি একতারা। এই একতারাটি বাজিয়েই গান গেয়ে মানুষের মন জয় করে চলেছেন। গান গেয়ে উপাজির্ত অথের্ই চলে তার সংসার। স্ত্রী, দুই কন্যা ও দুই পুত্রসহ তার ৬ সদস্যের পরিবার। গান শুনে দশর্করা খুশিমনে যে যা দেন তাতেই তিনি খুশি । অথির্বত্তের প্রতি তার তেমন কোনো লোভ না থাকলেও দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার মতো প্রবল ইচ্ছা তার আছে। বয়সের ভারে অন্য কোনো কাজ করে উপাজর্ন করার সামথর্্য তার নেই। চিত্তকে শুদ্ধ করে গানই তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। গানের সুরই সাদাসিধে এই মানুষটির জীবনকে করেছে ধন্য। দু’মুঠো ভাতের লড়াইটা তার এখনও একতারা বাজিয়ে। গান গাইতে গিয়ে লালনের ছেঁউড়িয়া থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানের অসংখ্য বাউল-সাধকের সাথে তার সাক্ষাৎ ও সান্নিধ্য লাভ হয়েছে। তবে তিনি কখনই ভুলতে পারেননি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ধাওড়া গ্রামের গায়ক নিয়ামত ফকির, কচুয়ার ছমির উদ্দিন, বাসুদেবপুরের আনন্দমোহন, কুমারখালী পান্টির জীতেন গেঁাসাই, শৈলকুপার নড়াগ্রামের মতলেব শাহ্, শ্রীপুর উপজেলার মালাইনগর গ্রামের আবু তালেব বয়াতী, ইছাপুরের সাহেব আলী, বরিশাটের আফজাল ও মকবুল ফকির, সারঙ্গদিয়ার প্রয়াত মেটন ফকিরসহ অসংখ্য গায়েনের কথা।