রাজবাড়ীতে নিঃস্ব হাজারো পরিবার

পদ্মার ভাঙন

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

কুদ্দুস আলম, গোয়ালন্দ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন এলাকায় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পদ্মাপাড়। ভাঙনের তীব্রতা কয়েকদিন কম থাকলেও গত দুই-তিন দিন ধরে তা আবার আগ্রাসী হয়ে গ্রাস করেছে ফসলী জমি, বাড়ি-ঘর ও মসজিদ-মাজার। ভুক্তভোগীরা জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া, দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়নের পদ্মার তীরবতীর্ এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা কম হলেও গত তিনদিন ধরে দৌলতদিয়ার ঢল্লা পাড়া, হাতেম মÐল পাড়া ও বেপারী পাড়া এলাকায় অতিমাত্রায় ভাঙনে পদ্মা পাড়ের মানুষের মাঝে হাহাকার দেখা দিয়েছে। দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়নেরও বিস্তীণর্ এলাকা ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে। ৩টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এদের ছাড়াও ভাঙন আতঙ্ক নিয়ে নদীতীরে বসবাস করছে অন্তত ২ হাজার পরিবার। বৃহস্পতিবার সরেজমিন দৌলতদিয়ার ঢল্লা পাড়া গ্রামে দেখা যায়, সেখানকার ঢল্লাপাড়া জামে মসজিদ, রমজান মুন্সির মাজারসহ বহু বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় লিয়াকত মীর মালত জানান, তার প্রায় ১০ বিঘা জমি ছিল, ২টি স্যালোমেশিন, ট্রাক্টরও ছিল। ছিল টিনের বড় ঘর। তা সবই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি নিঃস্ব। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মÐল জানান, গত প্রায় ১ মাসের ভাঙনে তার ইউনিয়নের প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে অচিরেই আফছার শেখের পাড়া, হাতেম মÐল পাড়া, ১ নং বেপারী পাড়া, ঢল্লাপাড়ার অবশিষ্ট অংশ বিলীন হয়ে যাবে। দ্রæত ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোডের্র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এসএম নুরুন্নবী জানান, গোয়ালন্দের ভাঙন প্রতিরোধে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে ঊধ্বর্তন কতৃর্পক্ষের কাছে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে গোয়ালন্দের নদী ভাঙন পরিস্থিতি বুধবার সরেজমিন পরিদশর্ন করেন ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. নুরুন্নবী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী, গোয়ালন্দ উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. আবু নাসার উদ্দিনসহ পানি উন্নয়ন বোডের্র কমর্কতার্রা। পরিদশর্নকালে ঢাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. নুরুন্নবী জানান, পদ্মাতীরের বসতিদের রক্ষায় নদী শাসন খুবই জরুরি। রাজবাড়ী জেলাকে টিকিয়ে রাখতে হলে এ প্রকল্প গ্রহণ করতেই হবে।