নানা অপরাধে ১৯ জনকে কারাদন্ড, সঙ্গে অর্থদন্ড

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
দেশের পাঁচ জেলায় মোটরযান আইন অমান্য, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, মাদক ও প্রতারণার দায়ে ১৯ জনকে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাঙামাটির লংগদু, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, কক্সবাজার, রংপুরের কাউনিয়া, ও নাটোরের বড়াইগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের এই দন্ড দেওয়া হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: লংগদু (রাঙামাটি) : রাঙামাটিতে লংগদুতে বাট্টাপাড়া বাজার ও লংগদু সদর এলাকায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১২ জনকে আর্থিক জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল আবেদীনের নেতৃত্বে লংগদু সদর ও বাইট্টাপাড়া বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় ভোক্তাধিকার সংরক্ষণ আইনে দুই খাবার হোটেল মালিককে এক হাজার টাকা, মুখে মাস্ক না পরে হাট-বাজারে ঘোরাফেরা করায় দুজনকে চারশ' টাকা, মোটরযান অধ্যাদেশ আইনে সাতজন মোটরসাইকেল চালককে পনেরশ টাকা এবং পাবলিক পেস্নসে প্রকাশ্যে ধূমপান করায় একজনকে দুশ টাকাসহ মোট ১২ জনকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়। বড়াইগ্রাম (নাটোর): নাটোরের বড়াইগ্রামে দুই ভুয়া চিকিৎসককে কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার সন্ধ্যায় নাটোর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হাসান ওই আদালত পরিচালনা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন গৌতম কুমার সরকার এবং মোনায়েম হোসেন খান। এর মধ্যে গৌতমকে এক বছর এবং মোনায়েমকে ৬ মাস কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার উপজেলার বনপাড়া পৌর বাজারে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হাসান। এসময় নিজেকে আমিনা হাসপাতালের সহকারী চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসক প্রদান করায় মহিলা কলেজ গেট থেকে আটক করে ভুয়া চিকিৎসক গৌতম কুমার সরকারকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। অন্যদিকে আইন লঙ্ঘন করে ডা. পদবি ব্যবহার করায় মাদ্রাসা মার্কেট থেকে আটক করে মোনায়েম খানকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। বড়লেখা (মৌলভীবাজার): বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকায় রোববার রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী যুবক তারেক আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তার ঘর থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট ও ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান। এসময় থানার এসআই আবু সাঈদ ছিলেন। দন্ডিত তারেক আহমদ (৩৫) পানিধার গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে। জানা গেছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম আল ইমরানের নেতৃত্বে রোববার রাতে পানিধার এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয়। থানার এসআই আবু সাঈদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযানে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। মাদক ব্যবসায়ী তারেক আহমদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। কক্সবাজার: শহরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রস্তুত এবং খাদ্যে নিষিদ্ধদ্রব্য মিশ্রণের অপরাধে ৩টি রেস্তরাঁকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো নবান্ন রেস্তরাঁ ১০ হাজার, কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্ট ২০ হাজার এবং আইবিচ রেস্তরাঁকে ১৫ হাজার টাকা। সোমবার অভিযানে এই দন্ড প্রদান করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা। এ ছাড়া মাস্ক ছাড়া রাস্তায় চলাচলকারী জনগণকে মাস্ক পরতে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কক্সবাজার শহরে আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় বলে জানান সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা। কাউনিয়া (রংপুর): রংপুরের কাউনিয়ায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার অপরাধে সুমি আক্তার নামে এক প্রাইভেট শিক্ষিকার অর্থদন্ড করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনাদায়ে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উলফৎ আরা বেগম এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়রে চর গনাই এলাকায় কিছু এনজিও স্কুলে বেশ কিছুদিন ধরে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সোমবার সকালে স্থানীয় আরিফুলের বাড়িতে এনজিও স্কুলে আরিফুলের স্ত্রী শিক্ষিকা সুমি আক্তার প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণির বেশকিছু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান। এ সংবাদ পেয়ে তিনি নিজেই ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঘটনার সত্যতা পান। এ সময় ওই শিক্ষিকা আদালতের কাছে তাদের অপরাধ স্বীকার করে। পরে শিক্ষিকা সুমি আক্তারকে ২ হাজার ৫০০ টাকা অর্থদন্ড করা হয়। অনাদায়ে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারান্ডের আদেশ দেওয়া হয়।