জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাচির্ং পদ্ধতি

প্রকাশ | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

মহাদেবপুর (নওগঁা) সংবাদদাতা
ক্ষতিকর পোকা দমনে এক সময় জমিতে ব্যাপকভাবে কীটনাশক ব্যবহার করা হতো। এখন সে প্রবণতা কমেছে। ধানক্ষেতে পোকা খেকো পাখি বসার ব্যবস্থা করে পোকা দমন করা হচ্ছে। পোকা দমনের পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতির নাম পাচির্ং। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৯৬৭ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়। কৃষকরা ২৮ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। এর শতভাগ জমিতে পাচির্ং পদ্ধতি ব্যবহার করে পোকা দমন করেছে কৃষকরা। এতে ফসলের জমিতে কীটনাশক ব্যবহার অনেকাংশে কমে গেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের দাবি, পোকা দমনে এই পদ্ধতি শতকরা ৭৫-৮০ ভাগ কাযর্কর। এ কারণে প্রতি একরে কীটনাশক খাতে চাষিদের খরচ কমেছে দুই হাজার টাকারও বেশি। পাশাপাশি কৃষকেরা এই পদ্ধতি ব্যবহার শুরুর পর পাখির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। মহাদেবপুর সদর, উত্তরগ্রাম, খাজুর, হাতুড়, চান্দাশ, সফাপুর, ভিমপুর, রাইগঁা, চেরাগপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধানক্ষেতে পা?চির্ং পদ্ধতির ব্যবহার দেখা গেছে। জমিতে পুঁতে দেয়া গাছের ডাল ও বঁাশের কঞ্চিতে শালিক, ফিঙে, বুলবুলিসহ নানা জাতের পাখি এসে বসছে। একটু পরপর ডাল থেকে জমির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছিল পাখিগুলো। যে জমিতে পোকা বেশি সেই জমিতে পাখির আনাগোনাও বেশি। উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক মকবুল বলেন, ধান লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে জমিতে ডাল পুঁতে দিয়েছি, ওই ডালে পাখি বসে পোকা ধরে খেয়ে ফেলে। জমিতে পোকা আক্রমণ করতে পারে না। কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না বিধায় উৎপাদন খরচ অনেক কমে গেছে। একই গ্রামের কৃষক ইয়চিন বলেন, ধান ক্ষেতে পাচির্ং পদ্ধতির সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এতে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কমর্কতার্ কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম প্রামাণিক জানান, পাচির্ং পদ্ধতি কৃষকের কৃষি ও পরিবেশ বান্ধব সুন্দর একটি পদ্ধতি। কৃষকদের মাঝে এ পদ্ধতি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার না করে পাচির্ং পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকদের ফসল উৎপাদনে খরচ কমে যাচ্ছে। শুধু একটি পাখির দ্বারা প্রতিমাসে কমপক্ষে দুই লাখের উপরে পোকা ধ্বংস করা সম্ভব।