যমুনার চরাঞ্চলবাসীর দুভোের্গর শেষ নেই

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ
কুলাউড়া উপজেলায় মনু নদীর ভাঙনে বিধ্বস্ত একটি ঘরের ভিটেতে নিবার্ক বসে আছেন গৃহকতার্ Ñযাযাদি
সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। দৈনন্দিন কাজে প্রায় দিন তাদের ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে হয়। বষার্ কিংবা বন্যায়, রোদ কিংবা বৃষ্টিতে কোনো সময়েই তাদের নেই ন্যূনতম যাত্রীসেবা পাবার সুযোগ নেই। দিনের পর দিন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই নদী পাড়ি দিয়ে জেলা ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করেন। উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী, মনসুরনগর, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, শুভগাছা, চরগিরিশ এবং মাইজবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় অধর্শত গ্রাম পুরোপুরি যমুনা নদী বেষ্টিত। এসব এলাকার মানুষের দৈনন্দিন কাজে বা চিকিৎসার জন্য যেতে হয় জেলা ও উপজেলা সদরে। অথচ তাদের যাতায়াতের একমাত্র বাহন ইঞ্জিনচালিত নৌকা। নারী, পুরুষ, শিশু, এমনকি গবাদী পশুসহ নানা পণ্য সামগ্রী নিয়ে তাদের ইঞ্জিনচালিত নৌকায় পারাপার করতে হয়। জানা যায়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দুগর্ম চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়ার নৌকা ঘঁাট থেকে এসব ইঞ্জিনচালিত নৌকা ঝড় তুফানের মধ্যেও ছেড়ে যায়। বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবহনের কাজে নিয়োজিত এসব ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী ও মালামাল বহন করে যাচ্ছে। কিন্তু এসব নৌকায় নেই কোনো বসার ব্যবস্থা, নেই ছাউনি কিংবা লাইফ জ্যাকেট। চরাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জানান, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চরাঞ্চলের মানুষকে বাধ্য হয়ে এসব নৌযানে চলাচল করতে হয়। ব্যবসায়ী ছাড়াও প্রতিদিন সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষাথীর্ এমনকি সরকারি কমর্কতার্-কমর্চারীরাও ঝুঁকি নিয়ে এভাবে যমুনা পার হন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মেঘাই ঘাটে একটি যাত্রী ছাউনি তৈরি করা হলেও তাতে যাত্রীদের কোনো সুবিধা হয়নি। নৌঘাটে নেই টয়লেট, বসার ব্যবস্থা। সরকারিভাবে একটি পন্টুন থাকলেও সেখানে একটির বেশি নৌকা ভেড়ানো যায় না। ফলে, প্রায়ই যাত্রীদের ঝুঁকিপূণর্ সিঁড়ি দিয়ে, পানি বা বালির মধ্যে লাফিয়ে নামতে হয়। যা নারী, শিশু, বৃদ্ধদের পক্ষে সম্ভব হয় না। সাইকেল, মোটরসাইকেল ও মালামাল নৌকায় ওঠানোর জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়, রোগী ও গভর্বতী মায়েদের উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার ক্ষেত্রে। দুযোর্গপূণর্ আবহাওয়ার সময় যাত্রী ও মালামালসহ নৌকাগুলো ডুবে গিয়ে এ পযর্ন্ত অনেক যাত্রীর প্রাণহানিও ঘটেছে। অনেকে আবার ব্যবসায়ী মালামাল হারিয়ে পথে বসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটুয়ারপাড়া ঘাট মালিক সমিতির সভাপতি ওমর আলী জানান, ঘাটগুলো প্রায়ই নানাস্থানে সরিয়ে নিতে হয় বলে যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার জন্য তেমন কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না। এদিকে নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, আমরা কাজিপুরের চরাঞ্চলবাসী, প্রশাসনের কাছে বারবারই দাবি করেছি- চরাঞ্চলের মানুষের নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।