মাত্র ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের কাছে বারবার ধরনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। জনপ্রতিনিধি ও নেতারা সবাইকে আশ্বাস দিয়েই বিদায় করেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। অবশেষে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে সংস্কার করলেন রাস্তা। এই কথাগুলো বললেন সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের লোকজন। ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো বাধাই বাধা না, এই মন্ত্র এখন এ গ্রামের মানুষের মুখে মুখে। প্রায় ৪শ' মানুষের ঘাম ঝরানো শ্রমে সংস্কার করা রাস্তা সবার জন্যই এখন দৃষ্টান্ত। এই রাস্তা নির্মাণকাজ ৪ এপ্রিল থেকে শুরু করে ১০ এপ্রিলে শেষ হয়েছে।
গ্রামবাসী জানান, কাশিপুর মাদ্রাসা থেকে বাস্কার কাড়া ও মঙ্গলের টিলা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার এই অংশে গ্রামের শতাধিক কৃষকের ৫শ' একর জমি রয়েছে। কিন্তু প্রধান সড়ক থেকে ওই সব জমিতে যাওয়ার রাস্তা নিচু থাকায় ফসল আনতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই ক্ষেতে বসেই অনেকে ফসল বিক্রি করে দিতেন। ফলে প্রতি বছর তাদের লোকসান গুনতে হতো। তাই রাস্তা নির্মাণে গ্রামের লোকজন অর্থ তুলে নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে ড্রেসিংয়ের কাজ করেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা নির্মাণের কাজ করছেন প্রায় শতাধিক মানুষ। ছেলেবুড়ো সবাই রয়েছেন এই দলে। ১-২ ফুট উঁচু করে হচ্ছে রাস্তা। স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেওয়া গ্রামের কয়েকজন বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হলে অনেকেই বাজারে ফসল বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পাবেন। তাই এ কাজে অংশ নিতে পেরে তাদের খুব ভালো লাগছে।
কাশিপুর গ্রামের ইয়ার আলী জানান, ১৯৯৩ সালে সাবেক চেয়ারম্যান আসাদ উলস্নাহ সরকার হাওড় থেকে ধান আনার জন্য রাস্তাটি করেছিলেন। এরপর থেকে সরকার বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এক সময় এই রাস্তায় জামালগঞ্জ-সেলিমগঞ্জের একমাত্র রাস্তা ছিল।
এই ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, 'গ্রামবাসীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এভাবে সমাজের সব কাজে সবাইকে এগিয়ে এলে যেকোনো কাজে সফলতা আসবে।'