ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভূঞাপুরে ১১ জনের কারাদন্ড

তিন জেলায় ৫৮ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা ধর্মপাশায় ড্রেজার ও পাইপ জব্দ

প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ১১ জনকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নীলফামারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও বরিশালের উজিরপুরে জরিমানা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৮০০ টাকা। অন্যদিকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ধ্বংস করা হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের ড্রেজার ও পাইপ। আমাদের আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের তথ্যে ডেস্ক রিপোর্ট : ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ১১ জনকে ২০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া অভিযানে চারটি ভেকু ও পাঁচটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। বুধবার উপজেলার জগৎপুরা বালুঘাটের্ যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. ইশরাত জাহান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র?্যাব-১২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার এরশাদুর রহমান। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ছাব্বিশা গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে এনামুল (৪৭), তাহাছান মিয়ার ছেলে ছানা (৪৯), জগৎপুরা গ্রামের পাঠান আলী খানের ছেলে ওয়াসিম খান (৪০), রসুনা গ্রামের খোকনের ছেলে ইমতিয়াজ (২৭), নলিন গ্রামের জুরান আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৩২), কুঠিবয়ড়া গ্রামের আকাব্বরের ছেলে ছালাম সরকার (২৪), বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), ছাব্বিশা গ্রামের হায়দর আলীর ছেলে হাফিজুর (৩২), কাদেরের ছেলে আপেল (৩২), জগৎপুরা গ্রামের পাঠান খানের ছেলে আরমান খান (৩৫) এবং ছাব্বিশা গ্রামের বাবলু মিয়ার ছেলে বিল্পব হোসেন (২৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৪ হাজার ৭৬২ টাকা জব্দ করা হয়। নীলফামারী ও রংপুর : রংপুর অঞ্চলের নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সেমাই কারখানাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ২০ কেজি ভেজাল লাচ্ছা সেমাই ধ্বংস করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়শ্রী রাণী রায়। তাকে সহায়তা করেন রংপুর বিভাগীয় বিএসটিআইয়ের ফিল্ড অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেনস ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। বুধবার বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক (পদার্থ) শাহাদৎ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মান সনদ না নিয়ে লাচ্ছা সেমাই উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে ডিমলা উপজেলার নাউতারা এলাকায় মেসার্স তৃপ্তি বেকারিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে ২০ কেজি ভেজাল লাচ্ছা সেমাই জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বুধবার দুপুরে বিধিনিষেধ অমান্য করে পৌরশহরে প্রবেশ করায় তিনটি বালুবাহী ট্রাক্টরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের এই অর্থদন্ড দেওয়া হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বালু ও মাটি বোঝাই ট্রাক্টর পৌরশহরে প্রবেশে বিধিনিষেধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালুভর্তি ট্রাক্টর পৌরশহরে প্রবেশ করায় তাদের এই জরিমানা করা হয়। বানারীপাড়া (বরিশাল) : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সারাদেশের মতো বরিশালের বানারীপাড়ায়ও এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন চলছে। তবে লকডাউন অমান্য করে কেনা-বেচা অব্যাহত রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতা ও পথচারীসহ মোট পাঁচজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার ৮০০ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত শারমিন। এ সময় বন্দরবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইন অমান্য করে দোকান খোলা রাখা এবং ফল, ওষুধ ও মুদি দোকানে মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি না মানার অপরাধে ৫ জনকে মোট দুই হাজার ৮০০ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়াও দ্রব্যমূল্য যাতে বেশি রাখা না হয় এ বিষয়টিও তারা মনিটরিং করেন। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত শারমিন জানান, লকডাউনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ ও গার্মেন্টসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নিশাত শারমিন। ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় খাসজমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত দুইটি ড্রেজার মেশিন ও আনুমানিক এক হাজার ফুট পাইপ জব্ধ করে ধংস করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনতাছির হাসান এই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বংশিকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের আমানীপুর গ্রামের সামনে খাজজমি থেকে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তুলে আসছিল। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার বিকালে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও মো. মুনতাছির হাসান। এ সময় খাসজমি থেকে দুইটি ড্রেজার মেশিন ও প্রায় এক হাজার ফুট পাইপ জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। অভিযানের বিষয়ে ইউএনও মো. মুনতাছির হাসান বলেন, খাসজমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুটি ড্রেজার ধংস করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সবসময়ই কঠোর অবস্থানে থাকবে।