শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
লকডাউনের অষ্টম দিন

প্রশাসনের তৎপরতা : তবুও বাজারে উপচেপড়া ভিড়

স্বদেশ ডেস্ক
  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০
কুমিলস্নার তিতাসে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না সাধারণ মানুষ -যাযাদি

বুধবার লকডাউনের অষ্টম দিনেও প্রশাসনের তৎপরতার মাঝেই হাটবাজার ও দোকান-পাটে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে বিধি-নিষেধের কোনো বালাই নেই। এদিকে, শহরগুলোতে চলছে ঢিলেঢালা লকডাউন। বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশের নীরব অবস্থান দেখা গেছে। লকডাউনে নিয়ম বহির্ভূত অনেক দোকান খোলাসহ হাট-বাজারে আসা মানুষের মধ্যে নেই সামাজিক দূরত্ব। অনেকের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে বিধি-নিষেধের কোনো বালাই নেই। আগের মতোই মানুষে সরগরম হাট-বাজারগুলো। রাস্তাগুলোতেও মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহনের অবাধ চলাচল। লকডাউনের অষ্টম দিনে শিথিলতার সুযোগে নির্দেশনা অমান্য করে গাইবান্ধা শহরের অধিকাংশ দোকানপাটের একাংশের শার্টার খুলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনা চলে।

এছাড়া চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান থাকলেও তৎপরতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে নির্দেশনা প্রতিপালনে জেলা ও উপজেলা সদরগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কাউনিয়া (রংপুর) : মানুষদের সচেতন করতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রশাসন ও পুলিশ অভিযান পরিচালনা করলেও হাট-বাজারে থাকছে ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব না মেনে দোকানগুলোতে চলছে কেনাবেচা। আর বাজারে চায়ের দোকানে পাশাপাশি বসে বা দাঁড়িয়ে আড্ডা চলছে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। বুধবার হারাগাছ পৌরসভার পাইকারবাজারে দেখা গেছে, গিজগিজ করছে মানুষ। সবজি কিংবা মুদি দোকানে আট-দশজন ক্রেতা গা ঘেঁষে বাজার করছেন। অনেকের মুখে মাস্ক নেই।

কাঁচাবাজার করতে আসা নয়াটারী গ্রামের সোবহান মিয়া (৪৫) বলেন, মাস্ক পরলে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আরেক ক্রেতা মেনাজবাজার বাঁধেরপাড় গ্রামের নয়া মিয়া (৩৮) বলেন, 'হামরা শ্রমিক মানুষ বিড়ির কাম করি খাই। হামাক করোনা ধরবের নয়।'

ইউএনও তাহমিনা তারিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা মানতে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালন করা হচ্ছে।

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) : সিরাজদিখান উপজেলায় ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে লকডাউন। এ সময় উপজেলার হাট-বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। বাজারগুলোতে লোকজনের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া বিভিন্ন অটোরিকশা চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় মালখানগর চৌরাস্তা, ইছাপুরা চৌরাস্তা, সিরাজদিখান বাজার, নিমতলা পয়েন্টসহ অনেক চৌরাস্তাগুলোয় যানজটও দেখা গেছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, 'মানুষ নিজে থেকে এটা সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। মানুষের অবজ্ঞা অবহেলার কারণে মাস্ক পরছে না। আইনের কঠিন প্রয়োগ দরকার।'

তিতাস (কুমিলস্না) : কুমিলস্নার তিতাসের বাতাকান্দি বাজারে বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসেছে। বাজারে আগতদের নেই শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই। বেশিরভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। হাজার হাজার মানুষের আগমনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাতাকান্দি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে কয়েক হাজার লোকের সমাগম। গৌরীপুর-হোমনা সড়কের পশ্চিম পাশে কুলা, আলতা, পলো, চালুন, টুকরি, ঝাড়ুসহ বেত ও বাঁশের তৈরি মালপত্রের বিশাল পসরা বসেছে। এখানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। গরুর বাজারের সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা মাস্ক ব্যবহারে তেমন আগ্রহ নেই। তিতাস থানার ওসি সৈয়দ আহসানুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। গ্রাম্য এলাকায় এটি বিশাল হাট হওয়ায় মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদা আক্তার বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাট বসবে। তবে বাতাকান্দি প্রচুর লোকজনের সমাগম হয়। নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে