তিন জেলায় আরও তিন মরদেহ

বান্দরবানে মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা ২৫ দিন পর লাশ উদ্ধার

প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
বান্দরবানে মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়ার ২৫ দিন পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে ফরিদপুরের সালথায় বৃদ্ধ, মাদারীপুরের শিবচরে গৃহবধূ ও বগুড়ার আদমদীঘিতে যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- বান্দরবান : বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে হাফেজ মো. অলি উলস্নাহ স্বাধীনকে (১৭) কুমিলস্না থেকে বান্দরবানের লামায় এনে জিম্মি করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে টাকা না পেয়ে পাহাড়ের একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে তাকে নৃশংসভাবে খুন করে লাশ মাটি চাপা দেয়। ২৫ দিন পর মাটির নিচ থেকে অপহৃত স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করেছে লামা থানা পুলিশ। খুন হওয়া হাফেজ মো. অলি উলস্নাহ স্বাধীন কুমিলস্না জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষুপুর গ্রামের মো. মোবারক হোসেন ও লুৎফা বেগমের ছেলে। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের শিং ঝিরি এলাকায়। এদিকে এ ঘটনায় লামা থানা পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে বেতঝিরি এলাকার বাসিন্দা ইউনুছ মোলস্নার বাড়ি থেকে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ফয়েজ আহমদ (৩৮) ও মো. আরিফুল ইসলামকে (১৭) আটক করে। ফয়েজ আহমদ ইউনুছ মোলস্নার মেয়ের জামাই বলে জানা গেছে। তাদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। পরে আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় অভিযানে নামে পুলিশ। পরে রাত ১টায় আসামি ও নিহতের দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে খুনের ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তারা। আসামিদের দেখানো স্থান রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর শিং ঝিরিস্থ পাহাড়ের উপরে মাটি খুঁড়ে নিহত স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করা হয়। লামা থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে ও তাদের দেখানো স্থানে মাটি খুঁড়ে আমরা নিহত স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতের পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সালথা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের সালথায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ওলিয়ার ৬০ নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওলিয়ার উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের সাধুহাটি এলাকার মৃত আদম শেখের ছেলে। সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত গোলদার বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার থেকে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদারীপুর : মাদারীপুরের শিবচরে সাথী বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের মামুন চৌকিদারের বাড়ি থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের অভিযোগ তাকে হত্যা করে মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মামুন চৌকিদার পলাতক রয়েছে। জানা গেছে, বুধবার ভোরে সাথী বেগমের স্বামী মামুন চৌকিদার তার শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে খবর দেয় সাথী ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ খবর পেয়ে সাথীর ভাই আনোয়ার হোসেন ও পরিবারের লোকজন গিয়ে সাথীর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্থানীয় প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। সাথীর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের দাবি তার স্বামী মামুন চৌকিদার তাকে হত্যা করে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। শিবচর থানার পরিদর্শক তদন্ত আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থল থেকে সাথী বেগমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সাথীকে হত্যা করে আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে স্পষ্টভাবে জানা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।' আদমদীঘি (বগুড়া) : আদমদীঘির শান্তাহারে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শান্তাহার স্টেশন এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনের ৪নং পস্ন্যাটফর্মের মসজিদের পাশে ওই অজ্ঞাত যুবকের লাশটি দেখে মুসলিস্নরা রেলওয়ে থানা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। শান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মনজের আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে জিআরপি থানায় একটি অপমৃতু্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।