বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলের খাদ্যভান্ডারে অবৈধ ইটভাটার থাবা!

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
  ১৮ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
নওগাঁর মহাদেবপুরে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটায় ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের -যাযাদি

আইনের তোয়াক্কা না করেই দেশের উত্তরাঞ্চলের খাদ্যভান্ডারখ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় তিন ফসলি কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। এসব ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেই। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও নিবন্ধনহীন ভাটাগুলো উৎপাদনে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর, নাটশাল, খাজুর, লক্ষণপুর, বাগডোব, চেরাগপুর, কালুশহর, আজিপুর, হাট চকগৌরীসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি ইটভাটা। এদের কারও নেই লাইসেন্স, আইনও মানছেন না কেউ। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ভাটা বন্ধে কোনোই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে প্রশাসন ও নওগাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উৎপাদন মৌসুমে এসব ইটভাটা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি ব্যবহার করে। এ পরিমাণ জমিতে প্রত্যেক মৌসুমে ছয় হাজার মণ ধান উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য অর্ধকোটি টাকা। ইট তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় ফসলি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপসয়েল)। এতে জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে এবং ফসল উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আবার কয়েকটি ভাটায় নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে অবাধে কাঠ পোড়ানো হয়। এর বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় ফসল, গাছ-গাছালি বিনষ্টের পাশাপাশি বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ।

উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম সরকার জানান, সমিতির সদস্যদের লাইসেন্স নবায়ন নেই। মালিকদের আইন মেনে ইট বানাতে বলেছেন তিনি। নওগাঁ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মকবুল হোসেন জানান, মহাদেবপুরের কোনো ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেই। তাদের হাতে বিচারিক ক্ষমতা না থানায় মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করতে পারেন না। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। এ ব্যাপারে ইউএনও মিজানুর রহমান মিলন জানান, অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার সুযোগ নেই। মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে তিনি প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে