মধুপুরে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের শঙ্কা

রাজারহাটে আগাম 'বিনা-১৭' জাতের ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

ম মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আমন ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একরের পর এক ধানী জমি। তাই উপজেলায় আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার কয়েকশ কৃষক। উপজেলার পঁচিশা, হাসনই, লোকদের, দক্ষিণ পঁচিশা, আম্বাড়িয়াসহ মধুপুরের বিভিন্ন গ্রামের ক্ষেতে ঘাস ফড়িংয়ের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৭১৩ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ১০ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে উফশী এবং ৮২২ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৭ হাজার ৮৬৬ মেট্রিক টন। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে, বাদামি গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণে অনেক ধানক্ষেতের রং পরিবর্ণ হয়ে বাদামি রং হয়ে গেছে। এ ছাড়া পাতামরা রোগেও অনেক ক্ষেতের ধানপাতা নষ্ট হয়ে গেছে। পঁচিশা গ্রামের আব্দুল আউয়াল বলেন, 'এলাকার অনেক ধানক্ষেত এমন হয়ে গেছে। বিবর্ণ হওয়া ক্ষেতগুলোর মধ্যে আমারও জমি রয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে সহায়তা পেলে হয়তো এতটা ক্ষতি হতো না।' এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, 'কিছু জমিতে পোকার আক্রমণের খবর আমরা পেয়েছি। এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাধারণত কৃষকরা কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শ না নিয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ীদের কাছ বেশি যান। তাই তারা ক্ষতিগ্রস্তও হন এবং এবারও তাই হয়েছে।' এদিকে আমাদের রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চলতি আমন মৌসুমে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে আগাম 'বিনা-১৭' জাতের ধান রোপণ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। এটি একটি আগাম জাতের ধান। এ জাতের ধান শুরু থেকে কাটা পর্যন্ত মোট ১১০ দিন সময় লাগে। এ ধান উত্তোলনের পর রবি ফসল সরিষা, আলু, বেগুন-মুলাসহ শাক-সবজির আবাদ করা যায়। পাশাপাশি অমৌসুমে ধান কাটায় গোখাদ্য হিসেবে ধানের খড়ের চাহিদা বাড়বে, সেই সঙ্গে বেশি দাম পাবেন কৃষকরা। জুলাইয়ের শেষের দিকে ধান রোপণ করে অক্টোবরের শেষের দিকে ঘরে ধান তোলা যায়। যা প্রায় একমাস আগেই বিনা-১৭ ধান উঠছে কৃষকের ঘরে। তাই আগাম বিনা-১৭ জাতের ধান কৃষকরা রোপণ করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বিনা উদ্ভাবিত স্বল্প সময়ের জাত বিনা-১৭ ধান এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ এলাকায়। রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, এসব জাতের একরে ফলন প্রায় ৬০-৭০ মণ। যা আমনে চাষ হওয়া অন্য গতানুগতিক জাতের চেয়ে একরে ১০ থেকে ১৫ মণ বেশি। জাতটির কারণে পতিত জমি না থাকায় বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এ বিষয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুধ খাওয়া মৌজার কৃষক ফজলুল হক মন্ডল (৬৫) বলেন, দেড় একর জমিতে এ ধান চাষ করেছেন। ফলন হয়েছে বেশ ভালো। আশা করছেন দেড় একরে এবার প্রায় ৯০ থেকে ১০০ মণ ধান পাবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আকতার বলেন, বিনা ধান-১৭ জাতের ধানসহ বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। যেগুলো গতানুগতিক ধান চাষের এক মাস আগে তোলা যায়। এ ধান ঘরে তুলেই আগাম রবি শষ্য চাষ করা যায়। তাই এ জাতীয় ধান চাষ করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।