শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছিঁচকে চোরের লোভের বলি হন শাহরাস্তির নুরুল দম্পতি লালপুরে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

ম চাঁদপুর ও শাহরাস্তি প্রতিনিধি
  ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

নুরুল আমিন (৬৫) ও তার স্ত্রী কামরুন নাহার (৬০) দু'জনই ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা। প্রায়ই তারা ব্যাংকে যাতায়াত করতেন। তাদের নিজের রিকশায় ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতেন দীর্ঘ দিনের পরিচিত প্রতিবেশী রিকশাচালক আব্দুল মালেক। ঘনঘন ব্যাংকে যাতায়াত করায় অনেক আগে থেকেই ছিচকে চুরির সঙ্গে জড়িত মালেক ফন্দি আটে ওই দম্পতির ঘরে চুরি করার। পরবর্তীতে এই ছিঁচকে চোরের হাতেই নিজ বাড়িতে খুন হন ওই দম্পতি। তারা চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া এলাকা নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তাদের এক ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে।

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে চাঞ্চল্যকর নুরুল আমিন দম্পতি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেসবিফিং করে এসব তথ্য জানান পিবিআইর পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভীন। শনিবার সন্ধ্যায় শহরতলি বাবুরহাট এলাকায় অবস্থিত পিবিআইর কার্যালয়ে এ প্রেস বিফিং করা হয়। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত এক আসামিসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন- খুনের সঙ্গে জড়িত উপজেলার ঘুঘুসাল এলাকার আবদুল মালেক, চুরি যাওয়া মালামাল ক্রয়কারী আসামি ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান এলাকার ইলিয়াস হোসেন ও বরিশাল জেলার কাউনিয়া উপজেলার চরবাড়ীয়া এলাকার বশির। তারা উভয়েই চাঁদপুর শহরে বসবাত করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় গেট খোলা পেয়ে আব্দুল মালেক ওই দম্পতির বাড়ির ছাদে অবস্থান নেয়। রাতে নুরুল আমিন ছাদে উঠলে পেছন থেকে আব্দুল খালেক লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত ও পায়ের মোজা দিয়ে শ্বাসরোধ করে সেখানেই হত্যা করেন। পরবর্তীতে চুরি করতে বিল্ডিংয়ের একটি রুমে যান। এ সময় ড্রয়ার খোলার শব্দে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আব্দুল মালেককে চিনে ফেলেন কামরুন্নাহার। তাই খালেক রড দিয়ে কামরুন্নাহারের মাথায়ও আঘাত করেন। এ ঘটনায় নিহতদের ছেলে জাকারিয়া বাবু বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে আমাদের নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোরে লালপুরে ৭ বছরের শিশুকন্যা নুসরাত জাহান বাবলী ওরফে জেমীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী ইলিয়াস হাসান ইমন ও তার বাবা সহযোগী আসামি ফাইজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতে পাঠানো হয়।

রোববার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের ও লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৯ অক্টোবর প্রতিবেশী আরশেদ আলীর বাড়িতে পিকনিকে যায় জেমী। সেখানে রান্না শেষে গোসলের জন্য সবাই বাড়ি গেলে শিশু বাবলী ইমনের বাড়িতে যায়। বাবলীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে ইমন। বাবলী কান্নাকাটি করলে ইমন হাঁসুয়ার উল্টোদিক দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করে। বাবলীকে খুঁজে পাওয়া না গেলে পরিবার থেকে থানায় জিডি করা হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর বাবলীদের বাড়ির অদূরের একটি জমি থেকে বস্তাবন্দি ডান হাত বিহীন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী ইমনকে এবং মরদেহ গুম করার সহযোগিতা করায় ইমনের বাবা ফাইজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে