‘পান বাবা’ মজিদুলের কেরামতি!

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

গাংনী (মেহেরপুর) সংবাদদাতা
মজিদুল
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ভাষায় ডায়বেটিস হচ্ছে সব রোগের জননী। এ রোগ নিরাময়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন। আবিষ্কার করেছেন নানা ওষুধ। যা সেবনে এ রোগ কিছুটা নিরাময় হলেও নিমূর্ল অসম্ভব। অথচ একটি পানের পাতাতেই এ রোগ নিমূর্ল সম্ভব বলে দাবী করেছেন মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের মজিদুল। আর এ কারণেই দূরদূরান্ত থেকে পান পাতা নিতে ছুটে আসছেন অনেকেই। মজিদুলের নিকটাত্মীয়সহ অনেকেই ডাইবেটিস নিরাময় হচ্ছে বলে দাবী করলেও এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি কেউ। এলাকায় মজিদুল এখন ‘পান বাবা’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছেন। গাংনী উপজেলা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এক পল্লীর নাম সাহারবাটি। গ্রামের মজিদুল পেশায় একজন দিনমজুর। গত রমজান মাসে তিনি স্বপ্নে দেখেন একটি পান পাতায় মন্ত্র পড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ালে রোগ নিরাময় হয়। সে অনুযায়ী প্রথমে তার আত্মীয় একই গ্রামের শরীফুলকে একটি গাছ ও ২১টি পানপাতা পড়ে ফু দেন। এতেই নাকি তিনি আরোগ্য লাভ করেছেন! পান পড়া নিতে আসা কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের আম্বিয়া জানান, তিনি দুই বছর যাবত এ রোগে আক্রান্ত। অনেক চিকিৎসক দেখিয়েছেন কিন্তু আরোগ্য লাভ না করায় পান পড়া নিতে এসেছেন। এদিকে, গ্রামের অনেকেই এ পান পড়ার কেরামতি প্রসঙ্গে সংশয় প্রকাশ করেন। তারা জানান, মজিদুল কোনো নামাজ কালাম করত না। সূরাহ কেরাতও জানে না। এখন বিনা পয়সায় পান পড়া দিলেও কয়েকদিন পর টাকা দাবি করবে। মজিদুল জানান, স্বপ্নে পাওয়া আদেশ তিনি পালন করছেন। পান পড়া দেয়ার সময় কারো কাছ থেকে কিছু নেন না তিনি। তবে রোগ ভালো হলে তিন কেজি চাল আর আড়াই কেজি চিনি নিয়ে আসেন রোগীরা। গাংনী বাজার জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী কোনো কিছু পড়ে খাওয়ানোটা ঠিক নয়। মজিদুল স্বপ্নে যেটা দেখেছেন বলে দাবী করছেন এটি বিশ^াসযোগ্য নয়। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহীন আলম জানান, পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পান সুপারির সঙ্গে ডায়বেটিস রোগের কোনো সম্পকর্ নেই। যিনি এটা রোগীদের দিচ্ছেন এটা প্রতারণা মাত্র।