প্রচারণার কবলে অসহায় গাছ!

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
চিরিরবন্দর উপজেলার মহাসড়ক ও সড়কের ব্যস্ততম স্থানের গাছগুলোতে পেরেক ঠুকে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যানার-ফেস্টুন ঝুলছে। সেখানে রয়েছে, ক্লিনিক, চিকিৎসক, হারবাল চিকিৎসালয়, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয় কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বোডর্। আছে রাজনৈতিক নেতাদের শুভেচ্ছা ব্যানারও। কোনো কোনো গাছের বুকে পেরেক ঠুকে, আবার কোথাও তার বেঁধে আটকানো হয়েছে এসব বোডর্। বোডর্গুলো দৃশ্যমান করতে কোথাও কোথাও ডালপালা ছেঁটে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। আগামী নিবার্চনী প্রচারণা ও ২০১৯ শিক্ষাবষের্ শিক্ষাথীর্ ভতির্র প্রচারণার অংশ হিসেবে বতর্মানে মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গাছের সৌন্দযর্ নষ্টসহ গাছগুলো স্বাভাবিক জীবনশক্তি হারিয়ে মরে যাচ্ছে বলে দাবি করেন কৃষি বিভাগ। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হাসপাতাল মোড়, বৃহত্তর রাণীরবন্দর, আলোকডিহি, বেকিপুল, চম্পাতলী বাজার, দেবীগঞ্জ বাজার, ভূষিরবন্দর, বিন্যাকুড়ি, ঘণ্টাঘর, অকড়াবাড়ি, বাংলাবাজার, আখতারের বাজার, ঘুঘুরাতলী, হাজীরমোড়, বেলতলী, কারেন্ট হাট, আমতলী বাজারসহ গুরুত্বপূণর্ হাটবাজার ও ব্যস্ততম সড়কের দুই পাশের গাছে গাছে পেরেক ঠুকিয়ে টানানো হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য ও ব্যক্তির ব্যানার-ফেস্টুন বোডর্। ইছামতি ডিগ্রি কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. আতাউর রহমান জানান, গাছের প্রাণ আছে, একেকটি গাছ যেন অক্সিজেন ফ্যাক্টরি। অক্সিজেন ছাড়া মানুষ বঁাচতে পারে না। পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব প্রবেশ করে। যার কারণে গাছের ওই স্থানে পঁচন ধরে। ফলে গাছের খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে গাছটি একসময় মারা যেতে পারে। উপজেলা কৃষি কমর্কতার্ কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, গাছে পেরেক ঠুকে কোনো ব্যানার ফেস্টুন, প্লাকাডর্সহ কোনো প্রকার প্রচারপত্র লাগানোর সরকারি নিদের্শনা নেই। এ ব্যাপারে শুধু কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তারা নিরুৎসাহিত করেন। উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) মো. গোলাম রব্বানী বলেন, গাছে পেরেক মারলে গাছের জীবনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। মাটি থেকে গাছ পানি শোষণ করে। গাছ সেই পানি ছাল দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। পেরেক মারলে গাছের ওই অংশ পঁচে গিয়ে গাছ মরে যেতে পারে। মানুষের শরীরে পেরেক ঠুকলে যেমন লাগে, গাছেরও তেমন লাগে। প্রশাসনের পক্ষ হতে তারা প্রায় ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।