হাওরে অভয়াশ্রমে মাছ লুটেরাদের দৃষ্টি!

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

কুলাউড়া প্রতিনিধি
বিলে মাছ লুটেরাদের পাতানো কারেন্ট জাল তুলছে উপজেলা মৎস্য অফিসের লোকজন Ñযাযাদি
মাছের বৃহত্তম প্রজনন কেন্দ্র মিঠাপানি খ্যাত হাকালুকির হাওরের অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ লুটেরাদের দৃষ্টি পড়েছে। অভয়াশ্রম এলাকায় মাছ ধরা সম্পূনর্ নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ এমন আইনও রয়েছে। সেই আইনের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করেই একটি চক্র প্রতিনিয়ত মাছ লুট করছে অভয়াশ্রম থেকে। এভাবে চলতে থাকলে অল্পদিনে হাওর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এদিকে, হাওরের অভয়াশ্রমগুলোর মধ্য থেকে ৩টি অভয়াশ্রমকে ইজারা দেয়ার পায়তারা চলছে। এ লক্ষে গত জুন মাসে হাওরের ১৫টি অভয়াশ্রমের মধ্যে ৩টি অভয়াশ্রমকে ইজারা প্রদানের জন্য উপজেলা ও জেলা পযাের্য়র জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে। জানা যায়, হাকালুকি হাওরে ২০১০ সালে ৫টি এবং ২০১১ সালে ১২টি জলমহালকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়। উপজেলা মৎস্য কমর্কতার্ ছাড়াও বেসরকারি সংস্থা এ অভয়াশ্রম বাস্তবায়নের কাজ করে। ২০১১ সালে ১২টি জলমহালের মধ্যে শুরুতেই ২টি জলমহালকে ইজারা দেয়া হয়। ফলে গত ৭-৮ বছর থেকে ১৫টি জলমহাল অভয়াশ্রম হিসেবে আছে হাওরে। এসব অভয়াশ্রমের কারণে হাকালুকি হাওরের বিপন্ন প্রজাতির মাছের বংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের উৎপাদনও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে হাওরের মাছ লুটেরাদের দৃষ্টি পড়ে অভয়াশ্রমগুলোর প্রতি। ওইসব লুটেরাদের ইন্ধনে বড়লেখা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় গত ১৪ জুন এবং মৌলভীবাজার জেলা জলমহাল কমিটির সভায় গত ১৪ আগস্ট হাকালুকি হাওরের অভয়াশ্রম ঘোষিত বাইয়া বিল, গজুয়া বিল ও পলোভাঙা বিল অভয়াশ্রমকে ইজারা প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়। সিএনআরএস ক্রেল প্রকল্পের মাঠ কমর্কতার্ মো. তোহিদুর রহমান জানান, জানতে পারলাম ৮ বছর আগে বাস্তাবায়িত হাকালুকি হাওরের ৩টি অভয়াশ্রমকে ইজারা প্রদানের জন্য উপজেলা ও জেলা জলমহাল কমিটি সুপারিশ করেছে। যা মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য হুমকি। জলমহাল কমিটি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব না করে অভয়াশ্রমগুলোকে ইজারা প্রদানের সুপারিশ করছে। এটাকে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বলবো। কুলাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. সুলতান মাহমুদ জানান, হাকালুকি হাওরের অভয়াশ্রমের মাছ লুটের খবর পেয়ে ১৩ নভেম্বর দিনব্যাপি অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। তিনি জানান, কোনভাবেই অভয়াশ্রমগুলোকে ইজারা প্রদান করা যাবে না। এগুলোকে সুরক্ষা করতে হবে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনে অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়াতে হবে।