বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
আগামীকাল নির্বাচন

ঝিকরগাছা পৌরসভায় ২১ বছর পর ভোট উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
  ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

সীমানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ ২১ বছর পর আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচন। ইভিএম পদ্ধতিতে ১৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে ভোটারদের মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভোটের তিন দিন আগে কেন্দ্র পরিবর্তন, সম্প্রতি ৯ কাউন্সিলর প্রার্থীর নামে নাশকতার মামলা ও ভয়ভীতির কারণে ভোটাররা রয়েছেন আতঙ্কে। তারা কেন্দ্রে যেতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে চিন্তিত আছেন প্রার্থীরাও।

জানা যায়, ৯ দশমিক ৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ঝিকরগাছা পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০১ সালের ২ এপ্রিল। পৌরসভার সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ৩টি। প্রথম ও একমাত্র নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল। সীমানা জটিলতা কাটিয়ে ২১ বছর পরে পুরাতন সীমানায় নির্বাচনের জন্য গত ৩০ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এবার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৩৯ জন। এবারের নির্বাচনে মোট ১৪টি ভোটকেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৮৬টি।

নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী একযোগে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই কার্যক্রমে আমি খুশি। ঝিকরগাছা পৌরবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বর্তমান সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভেবে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।

কম্পিউটার প্রতীকের প্রার্থী ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইমরান সামাদ নিপুন বলেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নাম উলেস্নখ করে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ বিভাগের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটের মাঠছাড়া করতে তার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, পুলিশি তলস্নাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে।

এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম আমানুল কাদির টুলস্নু, জগ প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক ছেলিমুল হক সালাম, মোবাইল প্রতীকে যুবলীগ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন, রেলইঞ্জিন প্রতীকে তরুণ উদ্ভাবক ও জাতীয় পলস্নী উন্নয়ন স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত আব্দুলস্নাহ আল সাঈদ। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত ভোটের দাবি করে আসছেন।

এদিকে, নির্বাচনের তিন দিন আগে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাজমুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের নারী বুথ সরিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী একরামুল হকের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিন কাউন্সিলর প্রার্থী আপত্তি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরমান হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী একরামুল হককে নির্বাচনে সুবিধা দেয়ার জন্যই কেন্দ্রটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের পাশেই একরামুল হকের নির্বাচনী কার্যালয় ও তার বাড়ি। ওই কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

নীতিমালা না মেনে ভোটকেন্দ্র ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, ভালো-মন্দ বিচার-বিশ্লেষণ করেই নির্বাচন কমিশন কেন্দ্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করতে নয়টি ওয়ার্ডে নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাইরের্ যাব, পুলিশ, বিজিবির সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে