শ্রীপুরে এক পরিবারের সবাই জন্মান্ধ

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ম শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
এ যেন নিয়তির নির্মম পরিহাস! একটি পরিবারের ৮ সদস্যের সবাই জন্মান্ধ। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। যদিও স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ শিশু ঝিনুকের চিকিৎসার ব্যয়ভারসহ নিয়েছেন তার পড়াশোনার দায়িত্ব। কিন্তু বাকি ৭ সদস্য নিয়ে হতাশার রেশ যেন কাটছেই না। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামের হলানিরচালা এলাকায় বসতি এ অন্ধ পরিবারটির। পরিবারের ওই ৮ সদস্য হলেন- আমির হোসেন (৪৭), তার স্ত্রী শিউলি আক্তার (৩৫), আমিরের বোন নাসরিন আক্তার (৩৪), হাসিনা আক্তার (৩২), আমিরের ভাই জাকির হোসেন (২৮), জাকির হোসেনের সন্তান জোনাকি আক্তার ঝিনুক (১০), হাসিনার সস্তান রূপা আক্তার (১৪) ও মারফ মিয়া (২)। ওই পরিবারের ১০ বছরের শিশু জোনাকি আক্তার ঝিনুক জানায়, গল্প করতে করতে আশপাশের সমবয়সীরা স্কুলে যাচ্ছে এমন আওয়াজ কানে এলেও দেখতে পায় না তাদের চেহারা। তারও পৃথিবী দেখতে মন চায়। ইচ্ছে করে সবার সঙ্গে খেলতে। দুঃখ প্রকাশ করে ঝিনুকের বাবা জাকির হোসেন বলেন, সংসার জীবনের বাস্তবতা অনেক অবহেলা আর অপমানের। তার অন্ধত্বের পর জন্মান্ধ ঝিনুক কোলে আসায় ফেলে চলে গেছে ঝিনুকের গর্ভধারিণী মাও। ওই আটজন অন্ধের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক আমির হোসেন। তিনি বলেন, সামাজিক অবহেলা, পারিবারিক দৈন্য, বিকল্প সক্ষমতা তৈরি করতে না পারায় এখন জীবনের আর কোনো লক্ষ্য নেই। শুধু বেঁচে থাকাটাই বড় চাওয়া। তাই কষ্টের জীবনের বাস্তবতা প্রতিটি মুহূর্ত যন্ত্রণার। দৃষ্টিহীন ঝিনুকের চিকিৎসা ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন সমাজসেবক সাদ্দাম হোসেন অনন্ত। তিনি বলেন, পুরো পরিবার চরম কষ্টে থাকায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম যায়যায়দিনকে জানান, ইতোমধ্যে পরিবারটিকে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে অন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।