শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
কৃষিতে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা

ইটভাটায় যাচ্ছে আবাদি জমির টপ সয়েল

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে মাটির উপরের উর্বর অংশ (টপ সয়েল) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু সেই উপকারী উর্বর অংশ কাটার মহোৎসব চলছে মাঠে মাঠে। নির্বিঘ্নে জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, টপ সয়েল হলো জমির উৎকৃষ্ট প্রাণ। জমির উপরের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটিকে সাধারণত উর্বর অংশ (টপ সয়েল) বলা হয়। মূলত ওই অংশেই থাকে মূল জৈবশক্তি। কৃষকরা জমির টপ সয়েল ইটভাটায় বিক্রি করে নিজেদের পায়েই কুড়াল মারছেন। অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। মাগুরার মহম্মদপুরের ৮ ইউনিয়নের বহু কৃষক মাটির উর্বর অংশ ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস থেকেই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠের কৃষি জমির উর্বর অংশ (টপ সয়েল) বিক্রি শুরু হয়। কারণ এই সময়ে ইটভাটায় ইট উৎপাদনের জন্য প্রচুর মাটির প্রয়োজন হয়। আবাদি জমির মাটি থেকে ভালো মানের ইট তৈরি হয়।

কিছু মাটি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ভাটা মালিকরা কৃষি জমির উর্বর অংশ ক্রয় করেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত তিন মাস ধরে চলে আবাদি জমির টপ সয়েল কাটার হিড়িক। কৃষি জমি সমতলের নামে অতি অল্প মূল্যে মাটি ব্যবসায়ীরা টপ সয়েল কিনে থাকেন। পরে তারা ভাটা মালিকদের কাছে তা চড়া দামে বিক্রি করেন।

জানা গেছে, উপজেলায় ৩৬টি ইটভাটা রয়েছে। ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে মাটি। আর ফসলি জমির মাটি হলে ইট তৈরিতে সুবিধাও বেশি। ফলে আবাদি জমির মাটির প্রতি ভাটা মালিকদের ব্যাপক আগ্রহ থাকে। তারপর টপ সয়েল কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। এতে করে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটিতে থাকা জিপসাম বা দস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া মাটিতে থাকা জীবাণু এবং অনুজীবের কার্যাবলি সীমিত হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে দিন দিন ফসলি জমির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুস সোবাহান বলেন, কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি করায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে।

এ বিষয়ে ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, 'টপ সয়েল কাটার কোনো খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাটির উর্বর অংশ বিক্রি না করার জন্য কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধও করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে