একই লঞ্চঘাট ইজারা দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও বিআইডবিস্নউটিএ

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ম পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার ফেলাবুনিয়া পন্টুনবিহীন লঞ্চঘাট ইজারা নিয়ে সরকারের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরকারি নথিভুক্ত রাঙ্গাবালী উপজেলার ফেলাবুনিয়া পন্টুনবিহীন লঞ্চঘাট ইজারা দিলেও বিআইডবিস্নটিএ একই ঘাটের নাম পরিবর্তন করে বড় বাইশদিয়া লঞ্চঘাট নামে আবারও ইজারা প্রদান করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কোষাগারে ইজারা মূল্য পরিশোধ করেও ঘাট বুঝে পাননি জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে থেকে নেওয়া ইজারাদার সিদ্দিকুর রহমান। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে কয়েক দফায় চিঠি দিয়েও ঘাট কিংবা টাকা কোনোটাই পাননি ওই ঠিকাদার। জানা যায়, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান (২৯) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ঘাট ইজারা নিয়েছিলেন। বন্ধুদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ৩৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ইজারা নেন তিনি। ইজারা গ্রহণের পর দেখতে পান বিআইডবিস্নউটিএ কর্তৃপক্ষ ঘাটের নাম পরিবর্তন করে বড় বাইশদিয়া লঞ্চঘাট নামে একটি পন্টুন স্থাপন করে তারাও ইজারা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার ফেলাবুনিয়া পন্টুনবিহীন লঞ্চঘাটটি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা আহ্বান করা হলে সদর উপজেলার নন্দীপাড়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ২০২১ সালের ২১ মার্চ ঘাটের ইজারা পান। পরে ২৫ মার্চ এক বছরের জন্য সরকারি কোষাগারে ইজারার টাকা জমা দেন সিদ্দিকুর। কিন্তু ওই একই ঘাট বিআইডবিস্নউটিএ কর্তৃপক্ষ ইজারা দেওয়ায় সিদ্দিকুর রহমান ঘাটের টাকা আদায় করতে পারেননি। বর্তমানে বিআইডবিস্নউটিএ ইজারাদার নাসির উদ্দিন টাকা উত্তোলন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ওই যুবক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগাযোগ করলেও দীর্ঘ ৯ মাসেও এর প্রতিকার পাননি। ঘাট ইজারা নেওয়া সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আমি ঘাট ইজারা পাই। সরেজমিন গিয়ে দেখি বিআইডবিস্নউটিএ ঘাটের নাম পরিবর্তন করে পন্টুন দিয়ে ইজারা দিয়েছে। তখন আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্যারের কাছে দেখা করলে তিনি রাঙ্গাবালী ইউএনওকে ঘাট বুঝিয়ে দিতে বলেন। তার সঙ্গে এ ব্যাপারে ছয়বার দেখা করলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ বিষয়ে ইউএনও মাশফাকুর রহমান বলেন, 'ফেলাবুনিয়া ঘাটের ইজারাদার প্রথমে একবার আমার কাছে এসেছিল, তখন আমি বলেছি দুই পক্ষের কাগজপত্র নিয়ে আসেন। কিন্তু সে পরে আর আসেনি। তদন্ত করতে বলেছি, তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে দিছে কিনা আমার খেয়াল নেই, আর কেউ আমাকে বলেওনি। আমি এখন খোঁজ নিয়ে দেখছি।' এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিআইডবিস্নউটিএ'র সহকারী পরিচালক ও নদীবন্দর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন খান বলেন, 'বিআইডবিস্নউটিএ সরকারী বিধি মোতাবেক ঘাট ইজারা প্রদান করেছে। দেড় লাখ টাকা ইজারা মূল্যে এটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন কিভাবে ইজারা দিয়েছিল সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।' এ বিষয়ে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, 'ঘাটটি বুঝিয়ে কেনো দেওয়া হয়নি এজন্য রাঙ্গাবালী ইউএনওকে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু তিনি দেননি সে কারণে তাকে আবারো চিঠি দেওয়া হবে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'